জাকির হোসেন:
গেল বছরের তুলনায় দেশে দারিদ্র্যের হার বেড়েছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এ হার ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৯ দশমিক ২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। আর শহর এলাকায় দারিদ্র্য ১ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ‘পভার্টি ম্যাপ অব বাংলাদেশ ২০২২’-এর ফলাফলে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এতে বলা হয়েছে, দারিদ্র্য সবচেয়ে বেশি বরিশাল বিভাগে, ২৬ দশমিক ৬ শতাংশ; আর সবচেয়ে কম চট্টগ্রাম বিভাগে, ১৫ দশমিক ২ শতাংশ। রংপুরে দারিদ্র্যের হার ২৫ শতাংশ, রাজশাহীতে ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ, সিলেটে ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ, ময়মনসিংহে ২২ দশমিক ৬ শতাংশ, খুলনায় ১৭ দশমিক ১ শতাংশ এবং ঢাকা বিভাগে দারিদ্র্যের হার ১৯ দশমিক ৬ শতাংশ। পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য বলছে, দারিদ্র্য বেড়েছে সিলেট, রংপুর, খুলনা ও ঢাকা বিভাগে।
সরকারের নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে এ পরিসংখ্যান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে নিশ্চয়ই। তবে কথা হচ্ছে, দারিদ্র্য দূরীকরণে কার্যকর কোনো উদ্যোগ আসলেই কি মিলবে? যদিও বলে থাকি, আমরা দিন দিন উন্নয়নের দিকে ধাবিত হচ্ছি; নিম্নআয়ের দেশ থেকে নিম্নমধ্য আয়ের দেশে পরিণত হয়েছি; আগামীতে আমরা মধ্যম আয়ের দেশেও পরিণত হব, তবে বাস্তবতা হচ্ছে, দেশে শ্রেণিবৈষম্য বাড়ছে; কিন্তু দরিদ্রদের ভাগ্যের পরিবর্তন কমই ঘটছে। উল্লেখ্য, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অনুযায়ী, ২০৩০ সাল নাগাদ অতি দারিদ্র্য বিদায় করতে চায় বাংলাদেশ। এ লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি কর্মসংস্থান বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। দেশে দারিদ্র্য কমার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখছে অভ্যন্তরীণ উৎপাদনশীলতা ও রেমিট্যান্স। পাশাপাশি শহর থেকে অনেক অর্থ এখন গ্রামে যাচ্ছে, যা দারিদ্র্যবিমোচনে প্রভাব রাখছে। সরকারকে সময়মতো এসডিজির লক্ষ্য অর্জন করতে হলে প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে। লাগাম টানতে হবে মূল্যস্ফীতিরও। সেই সঙ্গে শুধু সরকারি পর্যায়েই নয়, দারিদ্র্যবিমোচনে সাফল্য অর্জন করতে হলে বেসরকারি বিনিয়োগও আশাব্যঞ্জক পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। কারণ, বেসরকারি কর্মসংস্থানে গতি না এলে বেকারত্বের হার আশানুরূপ কমবে না। এ কারণে বিনিয়োগবান্ধব নীতি প্রণয়নই শুধু নয়, এর বাস্তবায়নও নিশ্চিত করতে হবে।
জাকির হোসেন, সম্পাদক, সিটিনিউজ সেভেন ডটকম