জাকির হোসেন:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহতদের সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসার যাবতীয় ব্যয়ভার বহনের ঘোষণা দিয়েছিল অন্তর্বর্তী সরকার। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রয়োজনে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছাত্র-জনতার সব বিল সরকার বহন করবে বলেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। তাদের খোঁজখবর নিতে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় একটি কমিটিও গঠন করে।
কিন্তু ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও হতাহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ কিংবা তাদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনে কার্যকর উদ্যোগের অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। তাই শনিবার ফের আহতদের সড়কে নামতে দেখা গেল।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জুলাই বিপ্লবে আহতদের মধ্যে যাচাই-বাছাই করে ১২ হাজার ৯৮১ জনের তালিকা হয়েছে। তবে তালিকাভুক্তদের মধ্যে এখনো ১ হাজার ২৩৮ জনের ক্যাটাগরি নির্ধারণ করা যায়নি। আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, চিকিৎসার ক্ষেত্রে এমন দীর্ঘসূত্রতা কাঙ্ক্ষিত নয়। আহত শরীর নিয়ে যারা সুচিকিৎসার আশায় দিনাতিপাত করছেন, শুধু তারাই জানেন এ প্রহর কত যন্ত্রণার! বিগত সরকারের দুঃশাসনের অবসানের পর পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে, এমন আশা করা তাদের জন্য ন্যায্যও বটে। দেশের প্রয়োজনে যারা জীবন বাজি রেখেছেন, দীর্ঘসূত্রতাকে তারা অবহেলা ভেবে যদি সড়ককে বেছে নেন, তাহলে এ লজ্জা আমাদের সবার। আবার এটাও সত্য, দাবি আদায়ে সড়ক অবরোধের মতো কর্মসূচিতে জনগণকে ভোগান্তির শিকার হতে হয়। আমরা মনে করি, ন্যায্য দাবি-দাওয়া আদায়ের মাধ্যম হিসাবে আলোচনাকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া উচিত। এতে অন্তত জনসাধারণের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ছন্দপতন ঘটে না। সময়ক্ষেপণ না করে সরকার আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, এটাই প্রত্যাশা।
জাকির হোসেন, সম্পাদক, সিটিনিউজ সেভেন ডটকম