স্পোর্টস ডেস্ক
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিউজিল্যান্ডের রেকর্ড রানের জবাবে টেম্বা বাভুমা ও রাসি ফন ডার ডুসেনের একশ ছাড়ানো জুটিতে লড়াই জমিয়ে তুলেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। মিচেল স্যান্টনার এই জুটি ভেঙে দিলে আর দাঁড়াতে পারেনি প্রোটিয়ারা। এই স্পিনারের পর গ্লেন ফিলিপস আঘাত করেন। তাতে হার সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। ৯ উইকেটে ৩১২ রানে থামে আফ্রিকানরা। বুধবার ৫০ রানে সেমিফাইনাল জিতে ভারতের বিপক্ষে ফাইনাল নিশ্চিত করলো নিউজিল্যান্ড।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে রেকর্ড ৩৬২ রান করে নিউজিল্যান্ড। কিন্তু পরিসংখ্যান ছিল তাদের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে। ওয়ানডে ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে সফল হওয়ার তালিকায় শীর্ষ দুটি স্থানই তাদের দখলে। ২০০৬ সালে ৪৩৮ ও ২০১৬ সালে ৩৭২ রান করে জিতেছিল প্রোটিয়ারা, দুইবারই তাদের সামনে পড়েছিল অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু এবার মিচেল স্যান্টনার ও গ্লেন ফিলিপসের স্পিন সামলে নিউজিল্যান্ডের ধারেকাছে যেতে পারেনি তারা।
পঞ্চম ওভারে রায়ান রিকেলটন (১৭) ম্যাট হেনরির শিকার হন। ২০ রানে ওপেনিং জুটি ভাঙার পর বাভুমা ও ডুসেন মিলে শক্ত জুটি গড়েন। ১০৫ রানে তাদের জুটি ভেঙে দেন স্যান্টনার। বাভুমাকে ৫৬ রানে ফেরান তিনি। সেট হওয়া ডুসেনও ৬৯ রানে তার শিকার। এরপর কিউই অধিনায়ক মাত্র ৩ রানে ফেরান দারুণ ফর্মে থাকা আইনরিখ ক্লাসেনকে।
১৬৭ রানে চার উইকেট পড়ার পর দক্ষিণ আফ্রিকা ওখানেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হারায়। এইডেন মার্করামকে (৩১) ফিরতি ক্যাচে মাঠছাড়া করেন রাচিন রবীন্দ্র। উইয়ান মুল্ডার (৮) মাইকেল ব্রেসওয়েলের শিকার হওয়ার পর ফিলিপস জোড়া আঘাত হানেন। মার্কো ইয়ানসেন (৩) ও কেশভ মহারাজ (১) প্যাভিলিয়নে ফেরেন।
কাগিসো রাবাদাকে নিয়ে ডেভিড মিলার বাউন্ডারি ওভার বাউন্ডারিতে গ্যালারি মাতান। তাতে কেবল ব্যবধানই কমেছে। বড় শট খেলতে গিয়ে হেনরির বলে ফিলিপসের ক্যাচ হন রাবাদা (১৬)। ইনিংসের বাকি সময়ে একাই লড়াই করেছেন মিলার। দলের হার সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ালেও ৪৬ বলে ৩ চার ও ২ ছয়ে পঞ্চাশ করা এই ব্যাটার সেঞ্চুরির জন্য ছুটতে থাকেন। শেষ ওভারে সফলও হন তিনি। ৬ বলে তাকে করতে হতো ১৮ রান। দুটি চার ও ছয় হাঁকানোর পর শেষ বলে ২ রান নিয়ে ৬৭ বলে সেঞ্চুরি উদযাপন করেন মিলার।
এর আগে টসে জিতে আগে ব্যাটিং বেছে নেওয়া নিউজিল্যান্ডের শুরুটা হয়েছে দ্রুতগতির। উইল ইয়ং ও রাচিন রবীন্দ্র মিলে যোগ করেন ৪৭ বলে ৪৮ রান। ২৩ বলে ২১ রান করে লুঙি এনগিদির শিকার হন ইয়ং। রাচিন অব্যাহত রেখেছেন আইসিসির ইভেন্টে নিজের সাফল্য। ওয়ানডাউনে নামা কেইন উইলিয়ামসনের সঙ্গে ১৬৪ রানের জুটিতে গড়েন কিউইদের বড় পুঁজির ভিত।
বড় ম্যাচে আবারও নিজেকে প্রমাণ করলেন রাচিন। তুলে নিলেন শতরান। ১০১ বলে ১৩টি চার ও ১ ছক্কায় ১০৮ রান করে কাগিসো রাবাদার বলে বিদায় নেন রাচিন। বড় মঞ্চের তারকা উইলিয়ামসনও পেয়েছেন সেঞ্চুরির দেখা। ৯৪ বলে ১০টি চার ও ২ ছক্কায় ১০২ রান করে উইয়ান মাল্ডারের বলে বিদায় নেন উইলিয়ামসন।
বাকি কাজটা করেন ডেরিল মিচেল ও গ্লেন ফিলিপস। প্রোটিয়া বোলারদের তুলোধুনা করে ন দুজনই। ৩৭ বলে ৪৯ করেন মিচেল। ফিলিপস ছিলেন আরও আগ্রাসী। ২৭ বলে ৬টি চার ও ১ ছক্কায় ৪৯ রানে অপরাজিত থাকেন ফিলিপস। কিউইরা পায় চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ইতিহাসের সবচেয়ে বড় দলীয় সংগ্রহের দেখা।
প্রোটিয়াদের পক্ষে লুঙি ৩টি উইকেট নিলেও, ১০ ওভারে দেন ৭২ রান। ৭০ রানে ২ উইকেট পান রাবাদা। মাল্ডার নেন একটি।