স্টাফ রিপোর্টার:
ঈদের আগে ব্যাংকগুলোতে নগদ টাকার চাহিদা বেড়ে সংকট তৈরি হয়েছে। সংকট মেটাতে এক ব্যাংক অন্য ব্যাংকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে বলে জানা গেছে।
ব্যাংক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ডলার কেনার কারণে বড় অঙ্কের টাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চলে যাচ্ছে। আবার ঈদের আগে সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানে বোনাস দিতে হচ্ছে, মাস শেষ হওয়ার আগেই অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মীদের বেতন বুঝিয়ে দিচ্ছে। ঈদের কারণে গ্রাহকরা ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিচ্ছেন। সব মিলিয়ে নগদ টাকার সংকট তৈরি হয়েছে।
তবে ঈদের আগে টাকা ধার দিতে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়ে রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এক্ষেত্রে সুদহার আগের চেয়ে বাড়তি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ধারের মাধ্যমে নগদ টাকার ঘাটতি মেটানোর সুযোগ দিতে আন্তব্যাংক মানি মার্কেট প্ল্যাটফর্মগুলো ২৯ ও ৩০ এপ্রিল খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার ব্যাংকগুলো কলমানিতে ৮ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা হাতবদল করেছে। এতে গড় সুদহার ছিল ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ। গতকাল ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ১৫৯টি লেনদেন সম্পন্ন করে। কলমানি হলো এক দিন ও রাতের জন্য টাকা ধার। বুধবার টাকা ধার নিলে বৃহস্পতিবার দিন শেষে তা ফেরত দিতে হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক রেপো ও অ্যাসিউরড লিকুইডিটি সাপোর্ট (এএলএস) হিসেবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে প্রতিদিন গড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা ধার দিচ্ছে। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংক এএলএস হিসেবে মোট ১৬টি ব্যাংককে ৬ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা ধার দিয়েছে। এর মধ্যে রেপোর সুদহার ছিল ৪ দশমিক ৮৫ শতাংশ। আর ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ সুদে এএলএস ধার দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকের সুদহার বেঁধে দেওয়ায় ভালো অবস্থানে থাকা ধারদাতা ব্যাংকগুলো এখন কলমানির পরিবর্তে শর্ট নোটিশে ২ থেকে ১৪ দিন মেয়াদি ধার দিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সুদহার ৯ শতাংশের বেশি।
বুধবার সবচেয়ে বেশি টাকা ধার দিয়েছে ব্যাংক এশিয়া। ব্যাংকটি এক দিনে ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা ধার দিয়েছে। এরপর সোনালী ব্যাংক দিয়েছে ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা, আইএফআইসি ব্যাংক দিয়েছে ৯০০ কোটি টাকা।
ব্যাংকগুলো কলমানি মার্কেটের বাইরেও এক ব্যাংক অন্য ব্যাংক থেকে টাকা ধার করে, যা আন্তব্যাংক রেপো নামে পরিচিত। এতেও সুদহার দিন দিন বাড়ছে।
কলমানি থেকে গতকাল সবচেয়ে বেশি টাকা ধার করেছে সিটি ব্যাংক। ব্যাংকটি এক দিনে ৯৫৩ কোটি টাকা ধার করেছে। এছাড়া, রূপালী ব্যাংক ৭৩০ কোটি ও মার্কেন্টাইল ব্যাংক ৬৮১ কোটি টাকা ধার করেছে।
সিটিনিউজ সেভেন ডটকম//আর/