স্টাফ রিপোর্টার:
সুইস ব্যাংকের কাছে ৬৭ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে তথ্য চেয়েছিল বাংলাদেশ। গত ১৭ জুন দেশটির আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা এফআইইউয়ের কাছে এ তথ্য চায় বাংলাদেশের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বিএফআইইউ।
রোববার (১৪ আগস্ট) হাইকোর্টে আসা বিএফআইউ-এর প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চে আজ এই প্রতিবেদনের ওপর শুনানির কথা রয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে অর্থ জমা নিয়ে নির্দিষ্ট করে দেশটির সরকারের কাছে বাংলাদেশ সরকার কোনো তথ্য কেন চায়নি, তা জানতে চান হাইকোর্ট।
আদালত বলেন, আমরা সুইস রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে পড়েছি। বিষয়টি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পেতে প্রকাশিত সংবাদ কপি জমা দিন। এই সময় দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্য শোনেন আদালত।
রোববার এ বিষয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
এ বিষয়ে গত ১০ আগস্ট সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশিদের টাকার বিষয়ে বাংলাদেশ নির্দিষ্ট কোনো তথ্য চায়নি বলে বক্তব্য দেন ঢাকায় নিযুক্ত সুইস রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড। তিনি বলেন, সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক বা এসএনবির ২০২২ সালের জুন মাসে প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী গত বছরে বাংলাদেশিরা প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ অর্থ সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে জমা করেছেন। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে সুইজারল্যান্ডে বাংলাদেশিদের আমানত দাঁড়িয়েছে ৮৭ কোটি ১১ লাখ সুইস ফ্রাঁ। প্রতি ফ্রাঁ বাংলাদেশি ৯৫.৭০ টাকা হিসাবে মোট টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৩৩৩ কোটি, যা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশিরা কত টাকা জমা রেখেছে, ওই তথ্য প্রতি বছর সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক দিয়ে থাকে। ওই অর্থ অবৈধ পথে আয় করা হয়েছে কিনা, এটি আমাদের পক্ষে বলা সম্ভব নয়।
বিষয়টি নিয়ে পাল্টা বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। তিনি বলেন, সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড যে বক্তব্য দিয়েছেন তা সত্য নয়। বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আরও বলেন, আমাকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এবং ফিন্যান্স সেক্রেটারি বলেছেন, তারা আগে তথ্য চেয়েছেন। যার বিপরীতে সুইজারল্যান্ড কোনো উত্তর দেয়নি।
আদালতে জমা দেওয়া প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসীকাজে অর্থায়ন প্রতিরোধ, অনুসন্ধান ও তদন্তের জন্য বিএফআইইউ বিদেশি এফআইইউদের সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান করে থাকে। তবে বিশ্বব্যাপী এসব তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যম হলো এগমন্ড সিকিউর ওয়েব (ইএসডব্লিউ)। ২০১৩ সালের জুলাইতে ইএসডব্লিউ’র সদস্য হয় বাংলাদেশ। এর পরেই চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত ৬৭ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে তথ্য চায় বিএফআইইউ।
ইএসডব্লিউ’র মাধ্যমে সুইজারল্যান্ডের এফআইইউকে এ তথ্য দিতে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু একজন ছাড়া অন্যদের বিষয়ে কোনো তথ্য নেই বলে জানিয়ে দেয় সুইজারল্যান্ড। সেই ব্যক্তির তথ্য পাওয়ার পর দুদককে দিয়েছে বিএফআইইউ।
সিটিনিউজ সেভেন ডটকম//আর//