আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইউক্রেন যুদ্ধের আট মাসেও কাঙ্ক্ষিত সাফল্য না পাওয়ায় রীতিমত চাপ বাড়ছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের। সাম্প্রতিক তার পদক্ষেপে এমন পরিস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
গত ২১ সেপ্টেম্বর ইউক্রেনে সেনা নিযুক্তির ঘোষণা দেন পুতিন। যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর রাশিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সেনা নিযুক্তির ঘোষণা। পুতিনের এমন ঘোষণার পর দুই লাখের বেশি মানুষের নাম নতুন সেনা হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে দেশটি।
তাদের যুদ্ধ করতে ইউক্রেনে পাঠাবে রাশিয়া। তবে পুতিনের এই উদ্যোগে রাশিয়াজুড়ে ব্যাপক অসন্তোষ ছড়িয়েছে। দেখা দিয়েছে বিক্ষোভ। বিক্ষোভ পর্যবেক্ষক সংস্থা ওভিডি-ইনফো জানিয়েছে, রাশিয়াজুড়ে প্রায় ২ হাজার ৪০০ বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে।
এছাড়া রাশিয়ার অনেক নাগরিক যুদ্ধে যেতে নারাজ। কোনো ধরনের ঝামেলায় না গিয়ে নির্বিঘ্ন জীবন চান তারা। কিন্তু যুদ্ধে যাওয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা এড়ানোও কঠিন। এই পরিস্থিতিতে পুতিনের ঘোষণার পর রাশিয়ার অনেক নাগরিক দেশ ছাড়তে শুরু করেন। সীমান্ত পাড়ি দিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোয় পাড়ি জমাচ্ছেন অনেকেই। তাদের মতে, এর ফলে রুশ সরকার তাদের জোর করে যুদ্ধে পাঠাতে পারবে না। তাদের জীবন রক্ষা পাবে।
ইউক্রেন যুদ্ধে সেনা মোতায়েনের অজনপ্রিয় সিদ্ধান্ত নেয়ার ফলে পুতিনের জনপ্রিয়তা কমতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। যদিও ইউক্রেনে অভিযান ঘিরে এর আগে পুতিনের জনপ্রিয়তা বেড়েছিল। ২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে নেন পুতিন। ওই সময় রাশিয়ায় পুতিনের প্রতি সমর্থন ৬০ শতাংশ থেকে বেড়ে ৯০ শতাংশ হয়। গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর আগে পুতিনের প্রতি ৬৫ শতাংশ মানুষের সমর্থন ছিল। অভিযান শুরুর পর তা বেড়ে ৮০ শতাংশ হয়।
তবে এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধে এখন পর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত সাফল্য না পাওয়া, কোনো কোনো জায়গায় রুশ বাহিনী বিপর্যয়ের মুখে পড়ার ঘটনা, সেনা নিযুক্তির অজনপ্রিয় সিদ্ধান্ত পুতিনের নেতৃত্বাধীন রাশিয়া সরকারকে চাপের মুখে ফেলেছে। জনগণের মধ্যে অসন্তোষ বাড়িয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত সেপ্টেম্বরে এক জরিপে পুতিনের প্রতি সমর্থন কমে ৭৭ শতাংশে নেমে এসেছে।
সূত্র: আল-জাজিরা
সিটিনিউজ সেভেন ডটকম//আর//