স্ত্রীকে গুলি করে হত্যাচেষ্টা, স্বামীর ২০ বছরের কারাদণ্ড
অক্টোবর ১১, ২০২২
বিশ্বজুড়ে বেড়েছে করোনায় মৃত্যু ও শনাক্ত
অক্টোবর ১২, ২০২২

ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতিকালে আটক ৬

স্টাফ রিপোর্টার:
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে একটি ডাকাত চক্রের ৬ সদস্যকে আটক করেছে র‌্যাব। আটকরা হলেন- সবুজ খাঁন (৪৬), মিন্টু পাটোয়ারী (৪০), রাসেল মোল্লা (৪৫), ইকবাল মিয়া (৩৯), মনিরুল ইসলাম (৪০) ও খোকন মিয়া (৪৫)।

সোমবার যাত্রাবাড়ীর ধলপুর কমিউনিটি সেন্টার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে র‌্যাব-১০। আটকদের কাছ থেকে ৩টি ভুয়া ডিবি পুলিশের জ্যাকেট, ২টি ওয়াকিটকি সেট, ১টি হাতকড়া, ১টি খেলনা পিস্তল, ১টি হ্যান্ড ফ্লাশ লাইট, ১টি পুলিশ মনোগ্রাম সম্বলিত স্টিকার, ৭টি মোবাইল ফোন ও নগদ ১০ হাজার ৯৫০ টাকা জব্দ করা হয়েছে।

র‌্যাব বলছে, ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি করা চক্রটির মূলহোতা সবুজ। চক্রটি নিজেদেরকে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, গুলিস্থান, মতিঝিল, বাইতুল মোকারমসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাংক থেকে মোটা অংকের টাকা উত্তোলনকারী ব্যক্তি ও বিভিন্ন প্রয়োজনে টাকা নিয়ে চলাচলকারী ব্যক্তিদের টাকা ও অন্যান্য মূল্যবান সম্পদ ডাকাতি করছিলো।

পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ডিবি পুলিশ সেজে তারা সোমবার যাত্রাবাড়ী এলাকার একটি ব্যাংক থেকে মোটা অঙ্কের টাকা উত্তোলনকারী ব্যক্তিদের টার্গেট করে টাকা ডাকাতি করতে গিয়ে র‌্যাবের হাতে আটক হয়।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১০ এর অধিনায়ক (সিও) মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আটক সবুজ এ চক্রের প্রধান। তারা মূলত ব্যাংক হতে টাকা উত্তোলনকারী ও টাকা বহনকারী ব্যক্তিদের টার্গেট করতো। এই কাজের জন্য আটক রাসেল ব্যাংক ও জনবহুল এলাকায় অবস্থান করে নির্দিষ্ট করে টাকা বহনকারী ব্যক্তিদের অনুসরণ করতো এবং অবস্থান সম্পর্কে তাদের সমন্বয়ক মিন্টুকে জানাতো। পূর্ব-পরিকল্পনা অনুযায়ী মিন্টু ও অন্যান্য সহযোগীরা ডিবি পুলিশের জ্যাকেট সদৃশ পোশাক, হাতে ওয়াকিটকি সেট ও হ্যান্ড-কাপ নিয়ে মাইক্রোবাসে করে ভিকটিমের সামনে উপস্থিত হয়ে নিজেদের ডিবি কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিতো।

এরপর কিছু বুঝে ওঠার আগেই ভুক্তভোগীকে মাদক কারবারি বা মামলার আসামি সাজানোর ভয় দেখিয়ে মাইক্রোবাসে উঠিয়ে মারধর ও দ্রুত স্থান ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যেতো। পরে ভিকটিমের কাছে থাকা টাকা, মোবাইলসহ যাবতীয় মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে ভিকটিমকে সুবিধাজনক স্থানে মাইক্রোবাস থেকে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যেতো।

র‌্যাব জানায়, আটক সবুজ ডাকাতি কাজের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি সরবারহকারী হিসেবে কাজ করতেন। ডাকাতরা তার সরবারহ করা সরঞ্জামাদি ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি করতো। তার বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী ও পল্টন থানায় একই অপরাধে ৩টি মামলা রয়েছে। মিন্টু পাটোয়ারী পেশায় একজন ছদ্মবেশী সিএনজি অটোরিকশা চালক। এ পেশার আড়ালে তিনি বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে ডাকাতির জন্য তথ্য সংগ্রহ করতেন। পরে তার দেয়া তথ্যে সুবিধাজনক সময় বাড়ি, দোকান, ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনকারী ব্যক্তিদের পথরোধ করে সর্বস্ব লুটে নিতেন।

রাসেল মোল্লা পেশায় গাড়ি চালক। তিনি এ পেশার আড়ালে ডাকাতদের গোয়েন্দা হিসেবে কাজ করতেন। ডাকাত সরদার সবুজের আদেশ অনুযায়ী বিভিন্ন ব্যাংক ও জনবহুল এলাকায় অবস্থান করে ব্যাংক থেকে মোটা অংকের টাকা উত্তোলনকারী ব্যক্তিদের অনুসরণ ও তার অবস্থান সম্পর্কে দলকে জানাতেন। রাসেলের বিরুদ্ধে ফরিদপুরের বোয়ালমারী ও গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

ইকবাল মিয়া ডাকাতির জন্য সবুজের অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন। প্রায় ৩ বছর ধরে নিজ বাড়ি মাদারীপুর জেলা শিবচর থেকে ঢাকায় এসে দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ডিবি পুলিশ সেজে ডাকাতি করে আবার শিবচর চলে যেতেন। তার বিরুদ্ধে বগুড়া শেরপুর থানায় একটি দস্যুতার মামলা রয়েছে।

মনিরুল ইসলাম পেশায় দর্জি। গত এক ধরে বছর দর্জি পেশা ছেড়ে ডাকাতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে মিন্টুর অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ করছিলেন। তার বিরুদ্ধে বগুড়া শেরপুর থানায় ধর্ষণের অভিযোগে মামলা রয়েছে। আটকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

সিটিনিউজ সেভেন ডটকম//আর//

 

rr
rr

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *