বাবার ওপর আক্রোশে মেয়েকে হত্যা, দুইজনের যাবজ্জীবন

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জ সদরে বাবার ওপর আক্রোশে মেয়ে শিউলী খাতুনকে (২৩) হত্যা করায় দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ১ বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২০ জুন) বেলা ১২টায় সিরাজগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ ফজলে খোদা মো. নাজির এ রায় দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিরাজগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান।

দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন- সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ব্রাহ্মনগাঁতি গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে সাদ্দাম হোসেন (৩৩) ও নাটোর জেলার সিংড়া থানার ক্ষিরপোতা এলাকার হাসান তালুকদারের ছেলে মাসুদ ওরফে নুরনবী (৩২)।

মামলার বিবরণে জানা যায়, সিরাজগঞ্জ জেলার সদরের চর ব্রাক্ষ্মনগাতীর হাসান তালুকদারের আগের স্ত্রী আন্নাহারের গর্ভের ও হাসান তালুকদারের ঔরসজাত সন্তান আসামি মাসুদ ও নুরনবী। তাদের বয়স যখন ৩/৪ বছর তখন হাসান তালুকদারের সঙ্গে মাসুদ ও নুরনবীর মায়ের বিচ্ছেদ হয়। সেই সময় থেকেই বাবা হাসান তালুকদার আসামি মাসুদ ও নুরনবীকে দেখাশোনা করতেন না। এ জন্য মাসুদ নাটোর জেলার সিংড়ার ক্ষিরপোতা গ্রামে মায়ের কাছেই থেকে বড় হন। মাসুদ ও নুরনবীর বয়স ২০ বছর হলেও তার বাবা হাসান তালুকদার লালন পালন না করায় তারা তার বাবার ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন।

অপরদিকে, হাসান তালুকদারের বাড়িতে আসা যাওয়া করায় তার মেয়ে শিউলি খাতুনের সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে উঠে আসামি সাদ্দাম হোসেনের। সে শিউলি খাতুনকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে হাসান তালুকদার ওই প্রস্তাবে রাজি না হয়ে মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দিলে তার ওপর ক্ষিপ্ত হন সাদ্দাম হোসেন।

শিউলি খাতুনের বিয়ের কয়েকদিন পর কোরবানি ঈদ উপলক্ষে একদিন আগে শিউলি খাতুন বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসলে আসামি সাদ্দাম হোসেন, মাসুদ ও নুরনবী পূর্ব আক্রোশে পরিকল্পনা মোতাবেক হাসান তালুকদারের অনুপস্থিতিতে ২০১০ সালের ২০ নভেম্বর সন্ধ্যায় ফুসলিয়ে শিউলি খাতুনকে নিয়ে যান। আসামিরা তাকে সদর থানার রাজিবপুর বিলের ধানী জমিতে নিয়ে গলা কেটে জবাই করে হত্যা করেন। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলার শুনানি শেষে আসামিদের অনুপস্থিতিতে আদালত এ রায় প্রদান করেন।

//এস//