নিজস্ব প্রতিবেদক
২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ ও কনস্টেবল আমিরুলকে পিটিয়ে হত্যার পর দেশের রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। ওই দিনের পর সহিংসতা, পুলিশের ওপর হামলা ও হত্যা মামলাসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত মোট ৫৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এসব মামলায় দলটির শত শত নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি বন্দি থাকায় হিমশিম খাচ্ছে কারা কর্তৃপক্ষ। চাপ সামাল দিতে অনেক বন্দিকে গাজীপুরে অবস্থিত কাশিমপুর কারাগারে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, কারাগারটির ধারণক্ষমতা প্রায় সাড়ে ৪ হাজার। কিন্তু বর্তমানে সেখানে আছেন ১১ হাজারের বেশি বন্দি। গত এক সপ্তাহে কারাগারটিতে ২ হাজার ৮২৯ জন বন্দি প্রবেশ করেছে। এদের অধিকাংশ বিভিন্ন রাজনৈতিক মামলার আসামি।
জানা গেছে, অতিরিক্ত বন্দিদের চাপে পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কারা কর্তৃপক্ষকে। প্রতিদিন নতুন করে কয়েকশ বন্দিকে কারাগারটিতে পাঠানো হচ্ছে। ফলে সেখানে গাদাগাদি অবস্থা বিরাজ করছে। এতে পরিস্থিতি সামাল দিতে একদিকে যেমন কারা কর্তৃপক্ষকে হিমশিম খেতে হচ্ছে তেমনি নানা সমস্যা পড়ছেন বন্দিরাও। প্রতিটি ওয়ার্ডে বন্দিদের চাপ বেশি থাকায় খাওয়া, ঘুম ও চলাফেরা করতে সমস্যা হচ্ছে তাদের।
আরও জানা গেছে, গত দুই সপ্তাহে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো বন্দিদের মধ্যে বেশিরভাগই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সদস্য। কেউ গ্রেপ্তার হয়েছেন সহিংসতার মামলায়, আবার কেউ গ্রেপ্তার হয়েছেন পুলিশের ওপর হামলার মামলাসহ বিভিন্ন মামলায়। বন্দিদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
এ বিষয়ে কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে সিনিয়র জেল সুপার সুভাষ কুমার ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দি ধারণক্ষমতা ৪ হাজার ৫৯০ জন। বর্তমানে ১১ হাজার ৩১৫ জন সেখানে অবস্থান করছেন। সম্প্রতি কারাগারে ২ হাজার ৮২৯ জন বন্দি প্রবেশ করেছে। আমরা কিছু বন্দিকে কাশিমপুরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তালিকা করে তাদের পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সূত্রে জানা যায়, গত ২১ অক্টোবর থেকে গতকাল (১ নভেম্বর) পর্যন্ত বিভিন্ন মামলায় ২ হাজার ১১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ডিএমপির তথ্য অনুযায়ী, ২১ অক্টোবর ৩১ জন, ২২ অক্টোবর ৪২ জন, ২৩ অক্টোবর ৪২ জন, ২৪ অক্টোবর ৮৫ জন, ২৫ অক্টোবর ১১১ জন, ২৬ অক্টোবর ২০২ জন, ২৭ অক্টোবর ৩৪০ জন, ২৮ অক্টোবর ৬৯৬ জন, ২৯ অক্টোবর ২৫৬ জন, ৩০ অক্টোবর ১৫৮ জন, ৩১ অক্টোবর ১৪১ এবং সর্বশেষ গতকাল বুধবার (১ নভেম্বর) ৯৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
//এস//