নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ ধামে শিবচতুর্দশীর মেলায় তীর্থ করতে আসা তিনজন পুণ্যার্থী ভিড়ে চাপা পড়ে মারা গেছেন।
আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৯টা ও বেলা ১টার দিকে চন্দ্রনাথ মন্দিরের সামনে পুণ্যার্থীদের মৃত্যু হয়। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৮ বছর বয়সী এক তরুণী রয়েছেন।
তিন দিনের শিবচতুর্দশী মেলার আজ ছিল দ্বিতীয় দিন। এবার মেলার প্রথম দিনে তীর্থযাত্রী তুলনামূলক কম এলেও দ্বিতীয় দিনে মেলায় উপচে পড়া ভিড় ছিল। পাহাড়ি পথে পা ফেলার জায়গা ছিল না।
চন্দ্রনাথ মন্দিরের অবস্থান সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১ হাজার ২০০ ফুট ওপরে চন্দ্রনাথ পাহাড়ের চূড়ায়। ভূমি থেকে চন্দ্রনাথ মন্দির পর্যন্ত পৌঁছাতে আঁকাবাঁকা দুর্গম পাহাড়ি পথ অতিক্রম করতে হয় পুণ্যার্থীদের। অনেক পুণ্যার্থী ওই পথে উঠতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চন্দ্রনাথ মন্দিরে ঢোকার পথে ১৮ বছর বয়সী এক তরুণী স্ট্রোক করে মারা গেছেন। ওই তরুণীর নাম ও পরিচয় জানা যায়নি।
পরিবারের সদস্যরা নিজ উদ্যোগে তাঁকে নামিয়ে এনেছেন। এরপর বেলা একটার দিকে তাঁরা খবর পান, চন্দ্রনাথ ধামে আরও দুজন পুণ্যার্থী মারা গেছেন। পরে তিনি ফায়ার কর্মীদের নিয়ে চন্দ্রনাথ ধামের দিকে রওনা দেন। বেলা তিনটার দিকে দুটি লাশ মন্দির এলাকা থেকে উদ্ধার করে সমতলে নামিয়ে আনেন। পরে সীতাকুণ্ড থানা-পুলিশের হাতে লাশ হস্তান্তর করা হয়।
নিহত দুজনের বয়স ৫০ বছর। এর মধ্যে একজন পুরুষ। তাঁর নাম বান্ট বলে জানা গেছে। বাবার নাম মাখন। তিনি কক্সবাজারের চকরিয়া এলাকার বাসিন্দা। অপর নিহত নারী পুণ্যার্থীর নাম, পরিচয় জানা যায়নি।
ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, মন্দিরে ঢোকার জন্য প্রবেশপথে প্রচুর ভিড়ের সৃষ্টি হয়। এই সময় কেউ হিটস্ট্রোক করে আবার কেউ ভিড়ের চাপে মারা গিয়ে থাকতে পারেন।
তবে সীতাকুণ্ড থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মজিবুর রহমান বলেন, একজন পুরুষ ও একজন নারী নিহত হওয়ার বিষয়টি তিনি নিশ্চিত হয়েছেন। তবে ১৮ বছরের তরুণী মারা গেছেন কি না, সে বিষয়ে তিনি নিশ্চিত নন।
সীতাকুণ্ড স্রাইন (মন্দির) কমিটির সহসম্পাদক সুব্রত চক্রবর্তী বলেন, মেলার প্রথম দিনে এবার দর্শনার্থী তুলনামূলক কম ছিল। কিন্তু আজ মেলার দ্বিতীয় দিনে দর্শনার্থীদের এত ভিড় ছিল যে চন্দ্রনাথ মন্দিরে ওঠার পথে পা ফেলার জায়গা ছিল না। চন্দ্রনাথ মন্দিরে দুজন তীর্থযাত্রী মারা যাওয়ার বিষয়টি তাঁরা শুনেছেন। কিন্তু নাম–পরিচয় পাননি।