জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা: খালেদার খালাসের রায় বহাল
মার্চ ৩, ২০২৫
মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক পাচ্ছেন আবরার ফাহাদ
মার্চ ৩, ২০২৫

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে নানা প্রশ্ন, যে জবাব দিলেন ড. ইউনূস

ডেস্ক নিউজ:
অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকেই সবচেয়ে বেশি আলোচনায় দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রায় ৭ মাস অতিবাহিত হওয়ার পর কোন অবস্থায় আছে পুলিশের মনোবল। দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে কীভাবে দেখছে অন্তর্বর্তী সরকার?

এসব বিষয়ে ড. ইউনূসের একটি বিশেষ সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বিবিসি বাংলার সম্পাদক মীর সাব্বির। সেই সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে দেশের চলমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির প্রসঙ্গটি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করলেও অপরাধের পরিমাণ মোটেই বাড়েনি বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

বিবিসি বাংলা: সংস্কারের কথা বলছিলেন, আমরা যদি আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে ফিরে আসি, পরিস্থিতির যে অবনতি হয়েছে, অনেকেই বলছেন যে তারা নানা রকম ভয়ে আছেন, আতঙ্কে আছেন – যেহেতু অপরাধটা তারা দেখছেন, রাস্তাঘাটে যেটা হচ্ছে। এটা আপনারা কেন নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না?

প্রধান উপদেষ্টা: অবনতিটা কোন পয়েন্ট থেকে হয়েছে? এটা বলতে হবে তো আমাকে। আপনি বলছেন অবনতি হয়েছে। কোন রেফারেন্স পয়েন্ট থেকে অবনতিটা হয়েছে? সেটা না দিলে তো আমরা বুঝতে পারবো না।

বিবিসি বাংলা: আমি যদি সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানের কথা বলি, গত বছর এই সময় থেকে অপরাধের পরিমাণ রাস্তাঘাটে যেমন…

প্রধান উপদেষ্টা: আমি তো হিসাব নিচ্ছি। অপরাধের পরিমাণ মোটেই বাড়েনি। আগের মতোই হয়েছে।

বিবিসি বাংলা: আমি যদি একটা পরিসংখ্যান আপনাকে দেই, গত ছয় মাসে …

প্রধান উপদেষ্টা: একটা দিয়ে তো আর বিচার হবে না; সমস্ত কিছু নিয়ে আসতে হবে।

বিবিসি বাংলা: ছয় মাসে ডাকাতির সংখ্যা ৫০ শতাংশ বেড়েছে। এটা পুলিশের পরিসংখ্যান অনুযায়ী। সেটা আমি বলছি। হয়তো পরিসংখ্যান বিভিন্ন হতে পারে, কিন্তু এটা আছে এবং হচ্ছে সেটা আমরা দেখতে পাচ্ছি। এটা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে সমস্যাটা কোথায় হচ্ছে?

প্রধান উপদেষ্টা: চেষ্টা করছি আমরা। সমস্যা আপনিও জানেন, আমিও জানি। প্রথমদিকে সমস্যা ছিল যে পুলিশ বাহিনী যাকে দিয়ে আমরা কাজ করাচ্ছিলাম, তারা ভয়ে রাস্তায় নামছিল না। দুই দিন আগে তারা এদেরকে গুলি করেছে। কাজেই মানুষ দেখলেই সে ভয় পায়। কাজেই তাকে ঠিক করতে করতেই আমাদের কয়েক মাস চলে গেছে। এখন মোটামুটি ঠিক হয়ে গেছে। এখন আবার নিয়মশৃঙ্খলার দিকে আমরা রওনা হয়েছি। কাজ করতে থাকবো।

বিবিসি বাংলা: সেই অপরাধের পাশাপাশি আরেকটা বিষয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে, যেটাকে মব বা দলবদ্ধ বিশৃঙ্খলা বলা হচ্ছে। যেমন গণপিটুনির একটা বিষয় দেখা গেছে। কিছুদিন আগের কথা যদি বলি, ধানমন্ডি ৩২-সহ সারা দেশে অনেক ভবনে ভাঙচুর হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘসময় ধরে এগুলো চললেও সরকারের কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তেমন ভূমিকা দেখা যায়নি। তখন কেন তেমন ভূমিকা দেখা গেল না? আপনি পরে এটা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তখন কেন কার্যকর ভূমিকা পালন করেনি?

প্রধান উপদেষ্টা: সময় নিচ্ছে। তারা প্রস্তুত হয়ে নিয়ে তাদের মানসিকতা থেকে এখনও মুক্ত হতে পারেনি। এটা একটা জিনিস হতে পারে। আরেকটা হলো যে আমরা তাদের বলেছি, যেকোনো পুলিশ স্টেশনে তারা যেকোনো রিপোর্ট করতে পারে। আইনের আশ্রয় নিতে পারে এবং সেটাকে আমরা সহজ করেছি এখন। বলছি তোমরা ইন্টারনেটে দিয়ে দিতে পারো, অনলাইন পেইজ করতে পারো। যাতে মামলা করতে গিয়ে, হয়রানি হয় – বরাবরই বাংলাদেশের যে ঐতিহ্য, থানাতে গেলে যে সমস্ত হয়রানি হয়, সেটা থেকে বাঁচার জন্য যেন অনলাইন করে। সেই অনলাইনের ব্যবস্থা করছে। যা যা আমাদের মনে হয়েছে যে মানুষকে সহজ করা যাবে, তাদের তথ্য আদানপ্রদান সহজ করা যাবে এবং মামলা করা সহজ করা যাবে, ইত্যাদি।

বিবিসি বাংলা: অনলাইনে তারা করতে পারছেন, সেটা আপনারা সহজ করেছেন কিন্তু আসল কাজটা তো পুলিশকে করতে হবে। আপনি যে বলছেন পুলিশ সেই পর্যায়ে যেতে পারেনি, তারা নিজেরা আস্থা পাচ্ছে না বা তারা সেভাবে সক্রিয় হচ্ছে না। প্রায় সাত মাস হয়ে গেছে, এখনও তাদের আস্থার সংকটটা দূর করা গেল না?

প্রধান উপদেষ্টা: এখনও সম্ভব হয়নি। বাট চেষ্টা করছি। অনেক ইম্প্রুভ হয়েছে। কিন্তু সমাধান হয় নাই।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

rr
rr

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *