বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের সঙ্গে হাসপাতালের কর্মচারীদের মারামারির পর বন্ধ হয়ে যাওয়া জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের (পঙ্গু হাসপাতাল) জরুরি বিভাগের চিকিৎসা সেবা ছয় ঘণ্টা পর আবার শুরু হয়েছে।
সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় মারামারির পর থেকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়ে চিকিৎসা নিতে আসা মানুষ। পরে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে জরুরি বিভাগের টিকেট বিক্রি শুরু হয়েছে। ডাক্তারও বসেন।
মনোহরদীতে মাপে কম দেয়ায় পেট্রোল পাম্পকে জরিমানা
হাসপাতালটির এক কর্মী বলেন, বেশ কিছুদিন ধরেই হাসপাতালে ভর্তি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এর মধ্যে রোববার রাতে ব্লাড ব্যাংকের কর্মী রফিককে মারধরের ঘটনা ঘটে।
ওই ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার হাসপাতালের সামনে অবস্থান নিয়ে কর্মবিরতি শুরু করেন কর্মীরা। এর মধ্যে তাদের ওপর ‘হামলা’ হয় বলে দাবি করেন ওই কর্মী।
তবে অভ্যুত্থানে আহত মামুন বলেন ভিন্ন কথা। ৫ আগস্ট আশুলিয়া থানার সামনে আহত হওয়ার পর থেকে তিনি এ হাসপাতালে এখানেই ভর্তি রয়েছেন।
মামুন বলেন, “পুরো হাসপাতাল চালায় দালাল সিন্ডিকেট। এর বিরুদ্ধে কথা বলায় সকাল ১০টার দিকে ফিজিওথেরাপি নিতে যাওয়া আমাদের কয়েকজনের ওপর হামলা চালায় হাসপাতালের একদল কর্মচারী ও দালাল।”
পরিস্থিতি সামাল দিতে হাসপাতালের প্রধান ফটকে পুলিশ আর ভেতরে সেনাবাহিনী অবস্থান নেয়।
সংঘাতের পর কর্মচারীরা হাসপাতাল ছেড়ে যাওয়ায় জরুরি বিভাগের টিকিট কাউন্টারগুলো খালি দেখা গেছে। কয়েকজন টিকিট কাটতে পারলেও কোনো চিকিৎসা পাননি বলে জানান।
সকালে দুর্ঘটনায় আহত হয়ে জরুরি বিভাগের এসেছেন হৃদয় নামের এক তরুণ।
তার সঙ্গে আসা মো. আব্বাস বলেন, “রোগীটাকে এভাবে ফেলে রাখা হয়েছে। ব্যথায় চিৎকার করতেছে, কিন্তু কেউ অ্যাটেন করছে না।”
নরসিংদী থেকে দুই বছরের শিশুকে নিয়ে আসা মো. ইয়াসিন বিকালে বলেন, আড়াই-তিন ঘণ্টা হল তারা হাসপাতালে এসেছেন, কিন্তু কোনো চিকিৎসা পাননি।
“বাচ্চাটা কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়ে আবার জেগে উঠে কাঁদতে শুরু করে। একজন ডাক্তার বা কর্মীও নাই হাসপাতালে।”
তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) ইবনে মিজান বলেন, আগে থেকেই তাদের দুই পক্ষের মনোমালিন্য ছিল। আহতদের দাবি ছিল ঠিকমতো সেবা না দেওয়ার। কর্মচারীদের দাবি, আহতদের আচরণ উগ্র ছিল। আজ বৈঠকে বসে পরিচালকের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। দুপক্ষের সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি।
হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কেনান বিকালে বলেন, “আমি এখন একটা মিটিংয়ে আছে। এখানে আর্মির কমান্ডিং অফিসারসহ অন্যরা আছে। একটু পরে কথা বলছি।”
পরে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সেবা কার্যক্রম শুরু হয়।