মোঃ জাকির হোসেন: করোনা মহামারির তাণ্ডব আর নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতার কারণে দীর্ঘদিন যাবৎ দেশবাসীকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ নিয়ে সবচেয়ে বেশি চিন্তিত সীমিত ও স্বল্প আয়ের মানুষ। স্বল্প আয়ের মানুষের রোজগারের সিংহভাগই ব্যয় হয় চাল, আটা ক্রয় বাবদ। কাজেই চালের দাম বাড়লে স্বল্প আয়ের মানুষের দুর্ভোগও বাড়ে। যেহেতু চালের উৎপাদন ও পর্যাপ্ত সরবরাহে কোনোরকম সংকট সৃষ্টি হয়নি, সেহেতু এখন চালের বাজার অস্থির থাকার কথা নয়।
কিন্তু বাস্তবতা হলো, গত এক মাসের ব্যবধানে বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) চালের দাম বেড়েছে সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা। এ অবস্থায় নিম্নআয়ের মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। খাদ্যপণ্যের বাজার যাতে যখন-তখন অস্থির হতে না পারে সে জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হলেও কিছু অসাধু ব্যবসায়ী নানা কৌশলে চালসহ নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির করেই চলেছে।
এ ক্ষেত্রে পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির বিষয়টি বহুল আলোচিত। প্রশ্ন হলো, অসাধু ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না কেন? বস্তুত মিল মালিকসহ ব্যবসায়ীদের একটি সিন্ডিকেট নানা কৌশলে চালের বাজার অস্থির করে তোলে। এবার এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মৌসুমি ধান বিক্রেতারা।
জানা গেছে, এবার মৌসুমি ধান বিক্রেতার সংখ্যা অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি। এসব মৌসুমি বিক্রেতা কৃষকের কাছ থেকে কম দামে ধান ক্রয় করে তা বিভিন্ন স্থানে মজুত করে রেখেছে। মজুতকৃত ধান এখন বিক্রি করছে বাড়তি দরে। এর প্রভাব পড়ছে চালের বাজারে।
চালসহ নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা দূর করা সম্ভব না হলে স্বল্প আয়ের মানুষ তাদের ভোগ কমাতে বাধ্য হবে। এতে অপুষ্টির শিকার হয়ে তাদের নানারকম রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়বে। কাজেই যে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট এসব অনৈতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত, তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকারের উচিত নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া।
এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, অসাধু ব্যবসায়ীদের ন্যূনতম মানবিকতা বলতে কিছু নেই। সঠিকভাবে আইন প্রয়োগ করে দ্রুত সব ধরনের পণ্যের বাজারের অস্থিরতা দূর করতে হবে। বাজারে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে তদারকির পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি বাড়াতে হবে। অতি লোভী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটকে যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করে, তাদেরও আইনের আওতায় আনতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
মোঃ জাকির হোসেন, সম্পাদক, সিটিনিউজ সেভেন ডটকম