ধর্ম ডেস্ক:
চাঁদাবাজি সম্পূর্ণ অসামাজিক কাজ। এটা অত্যন্ত ঘৃণিত ও গর্হিত অপরাধ। ডাকাতি ও দস্যুতার সঙ্গে এর মিল আছে। ইসলামের দৃষ্টিতে চাঁদাবাজি হারাম ও কবিরা গুনাহ। চাঁদাবাজির কারণে পরকালে ভীষণ শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।
আমাদের দেশে সাধারণত প্রভাবশালী চক্র জোরপূর্বক কাউকে নিজ কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলার জন্য অথবা নির্দিষ্ট স্থান অতিক্রম করা ইত্যাদির জন্য নির্দিষ্ট অথবা অনির্দিষ্ট পরিমাণে চাঁদা দিতে বাধ্য করে। এই কাজটিই চাঁদাবাজি হিসেবে পরিচিত ও জনশ্রুত।
চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত সবাই গুনাহগার
চাঁদা উত্তোলনকারী, চাঁদা লেখক ও চাঁদা গ্রহণকারী সবাই ওই গুনাহর সমান অংশীদার। কারো কাছ থেকে জোর করে টাকা নেওয়া হারাম। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা একে অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভোগ কোরো না এবং এ উদ্দেশ্যে বিচারকের কাছে এমন কোনো মামলা কোরো না যে মানুষের সম্পদ থেকে কোনো অংশ জেনেশুনে গ্রাস করার গুনাহে লিপ্ত হবে। ’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৮৮)
রাসুল (সা.) বলেন, কোনো মুসলমানের সম্পদ তার আন্তরিক সম্মতি ছাড়া হস্তগত করলে তা হালাল হবে না। (বায়হাকি, শুআবুল ঈমান, হাদিস : ১৬৭৫৬)
চাঁদাবাজদের ৪ ধরনের শাস্তি
চাঁদাবাজি করার জন্য সাধারণত ভয়ভীতি দেখানো হয়, ত্রাস সৃষ্টি করা হয়, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করা হয় এবং জমিনে ফ্যাসাদ বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হয়। এসব কাজ সম্পাদনকারীদের চারটি শাস্তির যেকোনো একটি শাস্তি দিতে হবে। হত্যা করতে হবে অথবা ফাঁসি দিতে হবে অথবা এক দিকের হাত এবং অন্য দিকের পা কেটে ফেলতে হবে অথবা অন্য এলাকার জেলে বন্দি করে রাখতে হবে যতক্ষণ না তারা খাঁটি তাওবা করে নেয়।
মহান আল্লাহ বলেন, ‘যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের সঙ্গে যুদ্ধ কিংবা প্রকাশ্য শত্রুতা পোষণ করে অথবা আল্লাহ ও রাসুলের বিধি-বিধানের ওপর হঠকারিতা দেখায় এবং (হত্যা, লুণ্ঠন, ধর্ষণ, অপহরণ, চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের মাধ্যমে) ভূ-পৃষ্ঠে অশান্তি ও ত্রাস সৃষ্টি করে বেড়ায়, তাদের শাস্তি এটাই যে তাদের হত্যা করা হবে অথবা ফাঁসি দেওয়া হবে অথবা এক দিকের হাত এবং অন্য দিকের পা কেটে ফেলা হবে অথবা অন্য এলাকার জেলে বন্দি করে রাখা হবে যতক্ষণ না তারা খাঁটি তাওবা করে নেয়। এটা তাদের জন্য পার্থিব ভীষণ অপমান আর পরকালেও তাদের জন্য ভীষণ শাস্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে…।’ (সুরা : মায়িদাহ, আয়াত : ৩৩)
গুনাহ এনে চাপিয়ে দেওয়া হবে
পাশাপাশি মানুষের হৃত অধিকার তাদের অবশ্যই ফিরিয়ে দিতে হবে। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের ওপর জুলুম করেছে, সে যেন তার কাছ থেকে ক্ষমা নিয়ে নেয় তার ভাইয়ের পক্ষে তার কাছ থেকে পুণ্য কেটে নেওয়ার আগেই। কারণ সেখানে কোনো দিনার বা দিরহাম পাওয়া যাবে না। তার কাছে যদি পুণ্য না থাকে, তাহলে তার (মজলুম) ভাইয়ের গুনাহ এনে তার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হবে। (মুসলিম, হাদিস : ১৮৮৫)
চাঁদা উত্তোলনকারী, ভোগকারী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা সরাসরি জালিম অথবা জালিমের সহযোগী। ইহকাল ও পরকালে তারা কঠিন শাস্তির উপযোগী। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘শুধু তাদের বিরুদ্ধেই (শাস্তির) ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, যারা মানুষের ওপর অত্যাচার করে এবং পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে বিদ্রোহ আচরণ করে বেড়ায়। বস্তুত তাদের জন্য আছে বেদনাদায়ক শাস্তি।’ (সুরা শুরা, আয়াত : ৪২)
সিটিনিউজ সেভেন ডটকম//আর//