স্টাফ রিপোর্টার:
রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগ ও সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ছাত্রলীগের মধ্যকার সংঘর্ষের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে। বিষয়টি জানিয়েছেন পুলিশের রমনা জোনের উপকমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান।
বুধবার (৩০ মার্চ) রাত সাড়ে এগারোটার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উভয় কলেজের প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার পর এ কথা জানান তিনি।
ডিসি সাজ্জাদ বলেন, ঘটনার পুরো বিবরণ একেবারে নিখুঁত ভাবে বের করার জন্য দুই কলেজের পক্ষ থেকেই আলাদা ভাবে তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে। আমরা যতটুকু জেনেছি টিটি কলেজের (টিচার্স ট্রেনিং কলেজ) কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে ঢাকা কলেজের তিন শিক্ষার্থীর চা খাওয়াকে কেন্দ্র করে বাদানুবাদ হয়। পরবর্তীতে সেখানে টিটি কলেজের ছাত্ররা ঢাকা কলেজের ছাত্রদের নাজেহাল করে বা গায়ে হাত দেয়৷ এই ঘটনার জেরেই পরবর্তীতে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও শান্ত রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীরা বর্তমানে কলেজে এবং তাদের আবাসিক এলাকায় ফিরে গিয়েছে। যেসব আহত শিক্ষার্থীরা ছিলেন তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ এবং টিচার্স ট্রেনিং কলেজের অধ্যক্ষসহ অন্যান্য শিক্ষক এখানে এসেছিলেন এবং তাদের মধ্যকার মত বিনিময় হয়েছে। এই ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ খতিয়ে দেখার জন্য তারা কমিটি করেছেন।
এছাড়াও পরবর্তীতে এই ঘটনার জেরে যেন পরিস্থিতির আবারও অবনতি না হয় সেটি ঠেকাতে দুই কলেজের সামনেই অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হবে বলেও জানান তিনি।
এর আগে, বুধবার রাত আটটার দিকে চায়ের দোকানে বসাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। আড়াই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা এ সংঘর্ষের ফলে বন্ধ হয়ে যায় মিরপুর রোডের উভয়পাশের যানচলাচল। এতে করে বেশ ভোগান্তিতে পড়েন ঘরে ফেরার অপেক্ষায় থাকে হাজার হাজার মানুষ।
পাল্টাপাল্টি ছোড়া ইটপাটকেলে গুরুতর আহত হন ঢাকা কলেজের ১৫ শিক্ষার্থী। আহতরা হলেন- কায়েস (২৪), সুরুজ (২৫), রাসেল (২৪), জসিমউদ্দিন (২৮), সুজন (২৮), খোকন (২৮), রুবেল (২৮), মামুন (২৬), শিহাব (২৬), মেহেদী (২৫), নিয়ন (২৫), আরিফ (২৫), জাহিরুল (২৫), সুজন (২৩) ও মাসুদ (২২)।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাত ১০ টার কিছু সময় পর ঘটনাস্থলে আসেন ঢাকা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ.টি.এম মইনুল হোসেন। পুলিশের উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসের মধ্যে চলে যেতে বলা হয় ৷ এ সময় পুলিশের পক্ষ থেকে তিনটি টিয়ারগ্যাস ছোড়া হয়।
এরপর ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের ভেতরে চলে গেলে ঘটনাস্থলে আসেন সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. গোলাম ফারুক। পরে দুই কলেজের অধ্যক্ষই ঘটনার কারণ অনুসন্ধান এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে আলাদা কমিটি গঠন করার বিষয়ে সম্মত হন৷
নিউমার্কেটের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাহেব আলী বলেন, এই মুহূর্তে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যান চলাচলও স্বাভাবিক হয়েছে। এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি বা বড় ধরণের হতাহতের ঘটনাও ঘটেনি। তবে ক্যাম্পাসের সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সিটিনিউজ সেভেন ডটকম//এফ//