অসুস্থ ব্যক্তি রোজা না রেখে ইতেকাফ করতে পারবেন?
এপ্রিল ২২, ২০২২
রাজধানীতে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা
এপ্রিল ২২, ২০২২

অগ্রিম টিকিট বিক্রি কার্যক্রম: নিয়ম ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে

মোঃ জাকির হোসেন:
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে গতকাল থেকে দূরপাল্লার বাসের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। গাবতলী, সায়েদাবাদ, কল্যাণপুর, আসাদগেট, আরামবাগ ও মৌচাকে অবস্থিত বিভিন্ন আন্তঃজেলা বাসের কাউন্টার থেকে আগাম টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন যাত্রীরা।

অনলাইনেও বেশ কয়েকটি পরিবহণের টিকিট সংগ্রহ করা যাবে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে ২৩ এপ্রিল থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার কথা জানিয়েছেন রেলপথমন্ত্রী।

মুসলমানদের প্রধান দুটি ধর্মীয় উৎসবের একটি হচ্ছে ঈদুল ফিতর। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর উৎসবের রঙ ছড়িয়ে আমাদের জীবনে ঈদুল ফিতর আসে। তবে ঈদ মানে খুশি বা আনন্দ হলেও প্রায় প্রতিবছরই জনজীবনে নিরানন্দের সুর ধ্বনিত হতে দেখা যায়। বস্তুত ঈদের আগে যানজট, ছিনতাই-ডাকাতি ও চাঁদাবাজি বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি জাল নোট, সড়ক ও লঞ্চ দুর্ঘটনা, বিশেষ করে যানবাহনের টিকিট সংকটে জনদুর্ভোগ চরমে উঠতে দেখা যায়।

বলার অপেক্ষা রাখে না, দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ক্ষেত্রে ঈদে বাড়ি ফেরার প্রথম ধাপ হলো নিজ নিজ গন্তব্যের টিকিট সংগ্রহ করা। অতীতে দেখা গেছে, বাস ও ট্রেনের কাউন্টারে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পরও আগাম টিকিট সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হয়েছেন অসংখ্য যাত্রী। আর যারা টিকিট সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছেন, তাদের পরিশোধ করতে হয়েছে চড়া দাম।

নৌপথের চিত্র ছিল আরও খারাপ। বেসরকারি লঞ্চের টিকিট বিক্রির ঘোষণা দেওয়ার আগেই তা শেষ হয়ে গিয়েছিল। একই অবস্থা পরিলক্ষিত হয়েছিল সরকারি সংস্থা বিআইডব্লিউটিসির ক্ষেত্রেও। যাত্রীদের অভিযোগ ছিল, নির্ধারিত কাউন্টারে টিকিট পাওয়া না গেলেও কালোবাজারে ঠিকই টিকিট মিলেছে। অতীতের মতো একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে এবার অগ্রিম টিকিট বিক্রি কার্যক্রমের দিন থেকেই অনিয়মগুলো দমন করা উচিত বলে মনে করি আমরা। টিকিট বিক্রিতে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে যে কোনো মূল্যে।

ঈদের আগে বিভিন্ন পথে চলাচলকারী যানবাহনের আগাম টিকিট বিক্রির রেওয়াজ দীর্ঘদিনের। এবারও তার ব্যত্যয় ঘটেনি, তা বলাই বাহুল্য। তবে আগাম টিকিট প্রাপ্তি নিয়ে বরাবরের মতো এবারও মানুষের মধ্যে প্রবল সংশয় বিরাজ করছে। দুঃখজনক হলেও সত্য, ঈদযাত্রায় টিকিট প্রাপ্তি থেকে শুরু করে বাড়ি পৌঁছানো পর্যন্ত প্রতিটি ক্ষেত্রেই জনগণের দুর্ভোগ যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে।

নির্ঝঞ্ঝাট ও নিরাপদ ভ্রমণের প্রত্যাশা নিয়ে ঘরমুখো মানুষ টিকিটের জন্য বাস, লঞ্চ ও রেলস্টেশনের টিকিট কাউন্টারে ভিড় জমানোর পর দীর্ঘসময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও কাক্সিক্ষত গন্তব্যের টিকিট সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হয়। মূলত অবৈধ পন্থায় অতিরিক্ত অর্থ উপার্জনের জন্য ঈদের আগে টিকিটের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে মানুষকে উচ্চমূল্যে টিকিট কিনতে বাধ্য করে একটি চক্র। দুর্মূল্যের বাজারে এমনিতেই মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত।

এ অবস্থায় কালোবাজারিদের কারসাজিতে মানুষ যদি টিকিটের পেছনে বাড়তি অর্থ ব্যয় করতে বাধ্য হয়, তবে উৎসবের রঙ ফিকে হতে বাধ্য। সাধারণ মানুষ যাতে এবার নির্বিঘ্নে ঈদে বাড়ি যেতে পারে, সে লক্ষ্যে বিভিন্ন যানবাহনের অগ্রিম টিকিট বিক্রির ক্ষেত্রে যে কোনো ধরনের অনিয়ম, অব্যবস্থা ও বিশৃঙ্খলা কঠোর হস্তে দমন করা হবে, এটাই প্রত্যাশা।

মোঃ জাকির হোসেন, সম্পাদক, সিটিনিউজ সেভেন ডটকম

rr
rr

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *