প্রভাসের পারিশ্রমিকের তুলনায় পিছিয়ে শাহরুখ-সালমান!
মে ১১, ২০২২
আকিজ ফুডে চাকরির সুযোগ, সপ্তাহে ২দিন ছুটি
মে ১১, ২০২২

ঘুষ খেলে যে গুনাহ হবে

ধর্ম ডেস্ক:

ঘুষ আদান-প্রদানের মাধ্যমে বাহ্যিকভাবে দুনিয়ার অনেক সুযোগ-সুবিধা পাওয়া গেলেও এর পরিণাম ভয়াবহ। উপরন্তু ঘুষ একটি জাতিকে ধ্বংস করে দেওয়ার অন্যতম হাতিয়ার। ঘুষের লোভেই মানুষ দুর্নীতিবাজ হয়ে ওঠে। ঘুষের জোরে নিশ্চিন্তে অসহায় মানুষের ওপর অত্যাচারের খড়্গ চালিয়ে দেওয়া যায়। চাইলে কাউকে সর্বস্বান্ত করে দেওয়া যায়।

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে এ জাতীয় কাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘তোমরা পরস্পরে একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভোগ কোরো না এবং এই উদ্দেশ্যে বিচারকের কাছে এমন কোনো মামলা কোরো না, যে মানুষের সম্পদ থেকে কোনো অংশ জেনে-শুনে গ্রাস করার গুনাহে লিপ্ত হবে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৮)

কারো ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে প্রভাবিত করার লক্ষ্যে উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাকে কিছু দেওয়াকে ঘুষ বলা হয়। ঘুষখোররা বিভিন্ন পন্থায় মানুষের কাছ থেকে ঘুষ আদায় করে থাকে। পার্থক্য হলো, কারো চাওয়ার ধরন ভিক্ষুকের মতো হয়, আবার কেউ মাস্তানদের মতো মানুষকে জিম্মি করেও তা আদায় করে থাকে। কেউ আবার ধনাঢ্য ব্যক্তিদের গুণগান গাওয়াসহ বিভিন্ন উপায়ে ঘুষ নিয়ে থাকে। কেউ কেউ পরিচিত মুখ দেখলে ঘুষ চাইতে পারে না, ফলে বিভিন্ন রকম আইনি জটিলতা দেখিয়ে তার কাজটি ঝুলিয়ে রাখে। তাই মানুষ বাধ্য হয়ে ঘুষ দিয়ে হলেও কাজ উদ্ধারের বিভিন্ন পন্থা খুঁজতে থাকে। অথচ রাসুল (সা.) ঘুষদাতা ও গ্রহীতা উভয় পক্ষকে অভিশাপ করেছেন। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আবদুল্লাহ ইবনে আস (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) ঘুষদাতা ও গ্রহীতাকে অভিসম্পাত করেছেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৫৮০)

অন্য হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে দেহ হারাম খাদ্য দ্বারা গড়ে ওঠে, তার জন্য দোজখের আগুনই উত্তম।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৬১৪)
ঘুষখোররা এতটাই নিচ ও জঘন্য হয় যে তারা রাষ্ট্রের মুচি, মেথরের কাছ থেকে ঘুষ নিতে পর্যন্ত লজ্জা বোধ করে না। তাদের টেবিলে জনগণের ফাইল যেন ভিক্ষার থালা হয়ে পড়ে থাকে। যতক্ষণ সেই থালায় ঘুষের টাকা পড়বে না, ততক্ষণ সেই ফাইলের কার্যক্রমও চলবে না। অথচ ইসলামের দৃষ্টিতে এটি জঘন্য খিয়ানত। কিয়ামতের দিন খিয়ানতের বোঝা নিয়েই তাদের উঠানো হবে।

হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আদি ইবনে উমাইরাহ আল-কিন্দি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, হে লোকেরা, তোমাদের মধ্যকার কোনো ব্যক্তিকে আমাদের সরকারি কোনো পদে নিয়োগ করার পর সে যদি আমাদের তহবিল হতে একটি সুঁই কিংবা তার অধিক আত্মসাৎ করে তবে সে খিয়ানতকারী। কিয়ামতের দিন সে তার এই খিয়ানতের বোঝা নিয়ে উপস্থিত হবে। তখন কালো বর্ণের জনৈক আনসার ব্যক্তি উঠে দাঁড়াল। বর্ণনাকারী বলেন, আমি যেন তাকে দেখছি। সে বলল, হে আল্লাহর রাসুল, আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব আপনি নিয়ে নিন। তিনি বলেন, তুমি কি বললে? সে বললো, আমি আপনাকে এরূপ এরূপ বলতে শুনেছি। তিনি বলেন, আমি বলেছি, যাকে আমরা কোনো দায়িত্ব দিয়েছি, সে কম-বেশি যা কিছুই আদায় করে আনবে তা জমা দেবে। তা হতে তাকে যা প্রদান করা হবে সে তা নেবে, আর তাকে যা হতে বিরত থাকতে বলা হবে সে তা থেকে বিরত থাকবে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৫৮১)

মহান আল্লাহ সবাইকে ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজদের কবল থেকে রক্ষা করুন। যারা অনিয়ম করে ও দুর্নীতিতে জড়িত এবং মানুষের ওপর অনৈতিকভাবে জুলুম করে— আল্লাহ তাআলা তাদের হেদায়েত দান করুন।

সিটিনিউজ সেভেন ডটকম//আর//

rr
rr

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *