গুগল ম্যাপসে স্বপ্নের সেতু
জুন ২৫, ২০২২
অপমানের প্রতিশোধ নিয়েছি : কাদের
জুন ২৫, ২০২২

বানভাসিদের পাশে দাঁড়ান

মোঃ জাকির হোসেন:

সিলেট ও সুনামগঞ্জসহ দেশের আরও অনেক জেলায় বিস্তৃত হয়েছে বন্যা। চরম দুর্ভোগের পাশাপাশি খেয়ে না-খেয়ে দিন কাটছে বানভাসিদের। হাওড়ের অনেক দুর্গম গ্রামে গত কয়েক দিনেও সরকারি ত্রাণ পৌঁছেনি।

মঙ্গলবার হেলিকপ্টারে করে বন্যাকবলিত এলাকা পর্যবেক্ষণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পর্যবেক্ষণ শেষে সিলেটে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে সহায়তা দেওয়া হবে। আমরা আশা করব, ত্রাণ নিয়ে কোনো রকম অনিয়ম ঘটবে না, কেউ বঞ্চিত হবে না।

অতীতে আমরা দেখেছি, বেশির ভাগ মানুষ ত্রাণ নিয়ে সাধারণত তত দূরেই গিয়েছেন, যতদূর যাওয়ার পর সন্ধ্যার আগে নিরাপদ স্থানে ফিরে আসা সম্ভব। এতে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষকে অবর্ণনীয় কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে।

আমাদের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার এ ধরনের সীমাবদ্ধতা জরুরি ভিত্তিতে কাটানোর পদক্ষেপ নিতে হবে। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় পুরো হাওড়াঞ্চল এখন অন্ধকারে। চার্জ না থাকায় মোবাইল ফোনেও নিজেদের অবস্থান জানাতে পারছেন না সেখানকার পানিবন্দি মানুষ।

আমরা জানি, বন্যা বিপুলসংখ্যক মানুষের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত করে তোলে। বন্যা উপদ্রুত এলাকার মানুষের প্রধান সমস্যা হিসাবে দেখা দেয় খাদ্য ও নিরাপদ পানি এবং বাসস্থান। বস্তুত এখন পানিবন্দি মানুষের মধ্যে চলছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির জন্য হাহাকার। এ অবস্থায় সরকারি ত্রাণের পাশাপাশি বানভাসি মানুষের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন সাধারণ মানুষও।

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা প্রতিদিনই ছুটছেন দুর্গতদের পাশে। ত্রাণ হিসাবে শুকনো ও রান্না করা খাবার দিচ্ছেন। আশ্রয়ের জন্য অনেকে নিজেদের বাসা উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় এ সহায়তা অপ্রতুল। তাই সবাইকে আরও মানবিকতার পরিচয় দিতে হবে। সরকারি প্রশাসনের পাশাপাশি এনজিওগুলোরও উচিত দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানো।

দেশের ভেতরে যেমন রেকর্ড বৃষ্টি হচ্ছে, তেমনি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতেও অতি ভারি বৃষ্টি হচ্ছে। উভয় ক্ষেত্রেই বর্ষণ অতীতের রেকর্ড ভাঙছে। কাজেই বন্যা দীর্ঘায়িত হলেও যাতে মানুষের কষ্ট না বাড়ে সেজন্য আগে থেকেই প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে হবে। বন্যাকবলিত এলাকায় শুকনা খাবারের পাশাপাশি পানি বিশুদ্ধ করার ট্যাবলেট, ওরস্যালাইন ইত্যাদি প্রাণরক্ষা-সহায়ক উপাদানের পর্যাপ্ত সরবরাহ যতদিন প্রয়োজন অব্যাহত রাখা উচিত।

ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য ত্রাণ প্রেরণ এবং তাদের পুনর্বাসনের বিকল্প নেই। এমনিতেই করোনার কারণে বহু মানুষের আয়-রোজগারের পথ হয়ে গেছে বন্ধ, তার ওপর বন্যার কারণে অনেকের বাসস্থান, কৃষিক্ষেত্র, মাছের ঘের ও গবাদিপশু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জানা গেছে, বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাবে ঝুঁকি নিয়েই অনেকে দূষিত পানি পান করছেন। এতে পানিবাহিত নানা রোগের প্রাদুর্ভাবের আশঙ্কা রয়েছে। অনেক এলাকার নলকূপ বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।

বন্যাকবলিত এলাকায় শৌচাগার সমস্যায় মানুষ চরম বিপাকে পড়েছেন। গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে রয়েছেন অনেকে। কাজ না থাকায় কষ্টে আছেন দিনমজুররা।

এ অবস্থায় যার যেটুকু সামর্থ্য আছে তা-ই নিয়ে দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে হবে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে শিশু ও বয়স্কদের প্রতি যাতে বিশেষ নজর রাখা হয়, সেজন্য সংশ্লিষ্টদের উৎসাহিত ও দিকনির্দেশনা প্রদান করতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব গবাদিপ্রাণীর জন্যও পর্যাপ্ত খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে।
মোঃ জাকির হোসেন, সম্পাদক, সিটিনিউজ সেভেন ডটকম

 

 

rr
rr

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *