দেশে ফিরেছেন ৩২ হাজার ৯১৫ হাজি
জুলাই ২৮, ২০২২
শুক্রবার কখন কোথায় লোডশেডিং
জুলাই ২৯, ২০২২

রিজার্ভ আরও কমল

বাজার স্বাভাবিক রাখতে প্রতিদিনিই ডলার বি‌ক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফ‌লে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধারাবা‌হিকভাবে ক‌মছে।

বুধবার (২৭ জুলাই) বি‌ভিন্ন ব্যাং‌কের কাছে প্রতি ডলার ৯৪ টাকা ৭০ পয়সা দ‌রে ৯৬ মিলিয়ন মা‌র্কিন ডলার ‌বি‌ক্রি ক‌রে‌ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

দিন শেষে রিজার্ভ নেমে দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৯৪৯ কোটি (৩৯ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন) ডলারে। প্রতি মাসে আট বিলিয়ন ডলার আমদানি ব্যয় হিসাবে এই অর্থ দিয়ে পাঁচ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

ডলারের বাজারে প্রতিদিন নতুন নতুন খবর হচ্ছে। দামের ওঠা-নামা, চাহিদা বৃদ্ধি, ডলার সংকট ও এলসি পেমেন্ট বাধাগ্রস্ত হওয়া, রিজার্ভ কমে যাওয়া এখন নিত্যদিনের ঘটনা। পরিস্থিতি সামাল দিতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দিচ্ছেন অর্থনীতি বিশ্লেষকেরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক মাসে রিজার্ভ কমে এ পর্যায়ে নেমেছে। এর আগে ধারাবাহিকভাবে যা বাড়ছিল। ১০ বছর আগে ২০১৩ সালের জুন শেষে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল মাত্র ১৫ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার। পাঁচ বছর আগে ছিল ৩৩ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার। সেখান থেকে বেড়ে গত বছরের আগস্টে প্রথমবারের মতো ৪৮ দশমিক শূন্য ৬ বিলিয়ন ডলার হয়। গত কয়েক মাস ধরে রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমছে।

বছরের শুরুতে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৪৬ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরের শেষ দিন ৩০ জুন রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৪১ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার।

একদিকে আমদানি বেড়ে যাওয়া, অন্যদিকে প্রবাসী আয় কমার কারণে দেশে মার্কিন ডলারের চরম সংকট সৃষ্টি হয়েছে। ফলে দিন দিন বাড়ছে দাম। অপরদিকে ডলারের বিপরীতে পতন হচ্ছে টাকার মান। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে বুধবার (২৭ জুলাই) ডলার বিক্রি করেছে ৯৪ টাকা ৭০ পয়সা দরে।

অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংক এদিন সরকারি আমদানি বিল মেটাতে এ দরে ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করেছে। নিয়ম অনুযায়ী এটিই ডলারের আনুষ্ঠানিক দর। একদিন আগেও এ দাম ছিল ৯৪ টাকা ৪৫ পয়সা। মে মাসের শুরুর দিকে এ দর ছিল ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সা। সে হিসাবে দেড় মাসের ব্যবধানে টাকার মান কমেছে ৮ টাকা ২৫ পয়সা।

ত‌বে খোলাবাজারে এক ডলার বি‌ক্রি হ‌চ্ছে ১১০ টাকা থেকে ১১১ টাকায়। সোমবার ছিল ১০৬ থেকে ১০৮ টাকা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বুধবার ব্যাংকে নগদ ডলার ১০৬ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। এর আগে গত রোববার খোলাবাজারে দর ছিল ১০৫ টাকা। এ বাজারে ডলারের দাম প্রথমবারের মতো ১০০ টাকার ঘর পেরিয়ে যায় গত ১৭ মে। এরপর আবার কমে আসে। ১৭ জুলাই ফের ১০০ টাকা অতিক্রম করে।

আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি ও প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স কমে যাওয়ার কারণেই মূলত দেশে ডলারের এ সংকট দেখা দিয়েছে। রপ্তানি আয় বাড়লেও ডলারের সংকট মেটানো যাচ্ছে না। ফলে প্রতিনিয়ত বেড়েছে ডলারের দাম। এ জন্য রিজার্ভ থেকে ডলার ছেড়ে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রতিনিয়ত দামও বাড়িয়েছে। এরপরও কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না ডলারের দাম।

মঙ্গলবার সব রেকর্ড ভেঙে খোলা বাজারে নগদ প্রতি ডলার বিক্রি হয় ১১২ টাকায়। তবে বুধবার কিছুটা কমে ১০৯ থেকে ১১০ টাকার মধ্যে কেনাবেচা হয়।

খোলা বাজারে গেল কয়েক দিন ধরে বেশ বড় অঙ্কের ডলার কেনার চাহিদা আসছে, যা মানুষের ব্যক্তিগত বিদেশ ভ্রমণের স্বাভাবিক চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠেছে, এত ডলার যাচ্ছে কোথায়, ডলার কি পাচার হচ্ছে? পাচারের বিষয়ে সাম্প্রতিক কোনো তথ্য-প্রমাণ পাওয়া না গেলেও বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে কিছু মানুষ ডলার কিনছে বলে সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন।

২০২০ সালের জুলাই থেকে গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু এরপর থেকে বড় ধরনের আমদানি ব্যয় পরিশোধ করতে গিয়ে ডলার সংকট শুরু হয়, যা এখন পর্যন্ত অব্যাহত আছে।

সিটিনিউজ সেভেন ডটকম//আর//

rr
rr

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *