স্টাফ রিপোর্টার:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাস এলাকায় মো. মহিউদ্দিন খান নামের একজন স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে একটি পাজেরো গাড়িতে উঠিয়ে ২০ লাখ টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী শাহবাগ থানায় অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন।
শনিবার বিকেল ৪টা ১০মিনিটের দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের সামনে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন ওই ব্যবসায়ী। ওই সময় ব্যবসায়ী মহিউদ্দিনকে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে একটি পাজেরো গাড়িতে উঠিয়ে নেয়া হয়। মহিউদ্দিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
মহিউদ্দিন বলেন, গতিরোধ করা ব্যক্তিদের প্রশাসনের লোক ভেবে মোটরসাইকেল থেকে নেমে পড়ি। এরপর আমাকে জোর করে একটি পাজেরো গাড়িতে উঠানো হয়। গাড়িতে উঠিয়ে হাত-মুখ বেঁধে ফেলার পরে বুঝতে পারি, ডাকাতদলের কবলে পড়েছি।
ভুক্তভোগীর দায়ের করা মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর নিউমার্কেটে রায়হান জুয়েলার্স নামক একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে মহিউদ্দিনের। শনিবার দুপুর ১টার দিকে তিনি বাসা থেকে তাঁতীবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। দুপুর ২টার দিকে তাঁতীবাজার ২১ নম্বর মার্কেটে পৌঁছান। কাজ শেষে বেলা ৩টার দিকে তাঁতীবাজার মোড় থেকে ভাড়া করা মোটরসাইকেলে করে নিউমার্কেটের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। বেলা সাড়ে ৩টার দিকে ঢাবি ক্লাবের মূল ফটক থেকে ২০ গজ আগে পৌঁছালে পেছন থেকে একটি গাড়ি এসে মোটরসাইকেলের সামনে দাঁড়ায়। ওই গাড়ি থেকে তিনজন নেমে এসে মহিউদ্দিনকে মোটরসাইকেল থেকে নামতে বলেন। প্রশাসনের লোক ভেবে মহিউদ্দিন মোটরসাইকেল থেকে নেমে যান।
নামার সঙ্গে সঙ্গে মহিউদ্দিনের মাথায় পিস্তল ঠেকানো হয়। পরে তাকে গাড়িতে তুলে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে ফেলা হয়। গাড়িতে তোলার সময় চালক ও পেছনে বসা আরও একজনকে দেখতে পান তিনি। মহিউদ্দিন তাদের জিজ্ঞাসা করেন, আমার চোখ বাঁধেন কেন ভাই? তখন তারা উত্তেজিত হয়ে মহিউদ্দিনকে চুপ থাকতে বলেন ও চোখে-মুখে কিলঘুষি মারতে থাকেন।
মহিউদ্দিন বলেন, কোনো কথা জিজ্ঞেস না করেই ওই লোকগুলো আমাকে মারধর করছিলেন। গাড়ি কিছুদূর যাওয়ার পর তারা আমার দুই হাত পেছনে নিয়ে হাতকড়া পরিয়ে দেন। এছাড়া, আমি যাতে চিৎকার করতে না পারি, সেজন্য গামছা দিয়ে মুখ বেঁধে ফেলেন।
মহিউদ্দিনের দাবি, ডাকাতদলের সদস্যরা তার দুই পায়ে রাবার দিয়ে বাঁধা ২ লাখ করে মোট ৪ লাখ টাকা ও কোমরে কাপড়ের বেল্টে বেঁধে রাখা আরও ১৬ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়েছেন। সঙ্গে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। পরে হাত-পা ও চোখ বেঁধে তাকে রাস্তার পাশে ফেলে দেয়া হয়। পরে রাস্তার পাশে কয়েকজন আমার গোঙানির শব্দ শুনে বাঁধন খুলে দেন। উদ্ধারকারীদের কাছ থেকে জানতে পারি, আমি কেরানীগঞ্জের আব্দুল্লাহপুর এলাকার রাস্তার পাশে রয়েছি। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় বিষয়টি আমার ভাই কবির হোসেনকে জানাই।
ডাকাতদলের সদস্যদের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, তাদের বয়স আনুমানিক ২৮-৩২ বছরের মধ্যে হবে। তাদের সবার উচ্চতা ৫ ফুট ৮ ইঞ্চির কাছাকাছি হবে। গায়ের রং শ্যামলা। পরনে ছিল প্যান্ট, হাফহাতা গেঞ্জি ও হাফহাতা কোটি। তাদের দেখলেই আমি চিনতে পারবো।
এ বিষয়ে ডিএমপির রমনা বিভাগের ডিসি মো. শহীদুল্লাহ বলেন, ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী শাহবাগ থানায় মামলা করেছেন। ঘটনার তদন্ত চলছে। এখন পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
সিটিনিউজ সেভেন ডটকম//আর//