জমি নিয়ে বিরোধে ভাইয়ের হাতে ভাই খুন
নভেম্বর ১৪, ২০২২
কুড়িগ্রামে ২৪ ঘণ্টায় ২৪ জন গ্রেফতার
নভেম্বর ১৪, ২০২২

ফারদিন হত্যার অকাট্য প্রমাণ এখনও মেলেনি: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র ফারদিন নূর পরশের হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আমাদের কাছে এখনো এমন কোনো অকাট্য প্রমাণ সহকারে কোনো তথ্য আসেনি।

সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর রাজারবাগ নৌ পুলিশের ৯ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ফারদিনের হত্যার প্রমাণ পেলে আপনাদেরকে জানানো হবে। আমরা যা বলি তথ্যভিত্তিক কথা বলি। এখনো কোনো অকাট্য প্রমাণ সহকারে কোনো তথ্য আসেনি।

মাদকের বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এই মুহূর্তে আমরা কিছু বলতে পারছি না।

সোমবার পর্যন্ত ফারদিন হত্যার ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কিছু নতুন বিষয় সামনে আসায় সেগুলো নিয়ে ‘ক্লু’ উদঘাটনে কাজ চলছে। ফলে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে রহস্য উন্মোচনে সময় লাগছে।

এদিকে, মাদকের সঙ্গে ফারদিনের সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছে। তবে বিষয়টি উড়িয়ে দিয়ে তার পরিবারের দাবি, ফারদিন মাদকের সঙ্গে কখনোই সম্পৃক্ত ছিলেন না। তিনি খুবই মেধাবী ছিলেন। ফারদিন ধনীর দুলাল নন, ফলে তাকে স্ট্রাগল করে বড় হতে হয়েছে। তার বাবার উপার্জন খুব বেশি নয়। এ অবস্থায় নিজের পড়ালেখার খরচ জোগাতে কোচিং ও টিউশনি করতেন ফারদিন। সেই টাকা থেকে ছোট দুই ভাইয়েরও খরচ দিতেন তিনি।

বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ গত ৫ নভেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। ওইদিনই রাজধানীর রামপুরা থানায় এ বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার বাবা কাজী নূর উদ্দিন। নিখোঁজের দুদিন পর গত ৭ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিনের মরদেহ উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ।

এরপরই তার দুই বন্ধু বুশরা ও শীর্ষ সংশপ্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এরপর গত ১০ নভেম্বর রামপুরার বাসা থেকে বুশরাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওইদিনই ফারদিন হত্যা মামলায় তাকে পাঁচ দিনের রিমাণ্ডে পাঠায় আদালত। বুশরা রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গত ৯ নভেম্বর দিবাগত রাতে ফারদিনের বান্ধবী বুশরাসহ অজ্ঞাতপরিচয়দের আসামি করে ‘হত্যা করে লাশ গুম’ করার অভিযোগে রামপুরা থানায় মামলা করেন ফারদিনের বাবা সাংবাদিক নূর উদ্দিন রানা।

ফারদিনের মরদেহ উদ্ধারের পরদিন গত ৮ নভেম্বর ময়নাতদন্ত শেষে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা শেখ ফরহাদ বলেছিলেন, ময়নাতদন্তে আমরা দেখতে পেয়েছি, ফারদিনের মাথায় এবং বুকে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে সেই আঘাত কোনো ধারালো অস্ত্রের নয়। আঘাতের চিহ্ন দেখে নিশ্চিত হওয়া গেছে এটি হত্যাকাণ্ড। পুলিশের চাহিদা ও অধিকতর তথ্যের জন্য তথ্য-উপাত্ত ও আলামত মহাখালী ভিসিআরে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে প্রতিবেদন পেলে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যাবে ফারদিনকে কীভাবে খুন করা হয়েছে।

ফারদিনের বাবা নূর উদ্দিন রানা বিজনেস পত্রিকা ‘দ্য রিভারাইন’ এর সম্পাদক ও প্রকাশক। তিনি দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে সাংবাদিকতা করছেন। ফারদিনের মা ফারহানা ইয়াসমিন গৃহিণী। তাদের গ্রামের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা উপজেলার নয়ামাটিতে। তিন ভাইয়ের মধ্যে ফারদিন ছিলেন সবার বড়। তার মেজ ভাই আবদুল্লাহ নূর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন। ছোট ভাই তামিম নূর এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন।

রহস্য উন্মোচনে থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশ, এলিট ফোর্স র‍্যাব, সিআইডিসহ একাধিক ইউনিট কাজ করছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন এলাকার শতাধিক সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ফারদিনের সবশেষ অবস্থান শনাক্ত ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করেও কাজ করছে পুলিশ।

তবে এরই মধ্যে পুলিশ জানিয়েছে, ফারদিনের হত্যাকারী টেকনোলজিক্যালি খুবই স্মার্ট।

 

সিটিনিউজ সেভেন ডটকম//আর//

rr
rr

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *