নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর ডেমরা থেকে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা মূল্যের রপ্তানিযোগ্য চোরাই গার্মেন্টস পণ্যসহ একটি কাভার্ডভ্যান উদ্ধার করা হয়েছে। এসময় সংঘবদ্ধ আন্তঃজেলা ডাকাত চক্রের মূলহোতাসহ সাত সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৪।
শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে ডেমরার একটি প্যাকেজিং ভবনের সামনে ও ভবনের দ্বিতীয় তলায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ২৫ হাজার পিস গার্মেন্টস সামগ্রী ভর্তি একটি কাভার্ডভ্যানসহ তাদের গ্রেফতার করা হয়।
শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় র্যাব-৪ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(মিডিয়া)জিয়াউর রহমান চৌধুরী।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, মো. তাওহিদুল কাউছার (৪২), মো. নাজিম (৩৫), মো. মাসুদ (৩৫), মো. দুলাল (৪৫), মো. মিরাজ উদ্দিন (৩৩), আব্দুল আল মাসুদ (৩০) ও মো. সাইফুল ইসলাম (২২)।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউর রহমান চৌধুরী জানান, গ্রেফতারকৃতরা পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর মিরপুর, উত্তরা, আশুলিয়া ও গাজীপুর থেকে বিভিন্ন দেশে রপ্তানির গার্মেন্টস পণ্য চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করেছেন। তারা মালামাল পরিবহনে নিয়োজিত চালকদের সঙ্গে সংঘবদ্ধ হয়ে একটি দুর্ধর্ষ ডাকাত চক্র গঠন করে।
তিনি জানান,গত কয়েক বছর ধরে গার্মেন্টস মালামাল কাভার্ডভ্যান থেকে ডাকাতি করে স্থানীয় মার্কেটে চোরাইপথে কম দামে বিক্রি করতো চক্রটি। এতে করে দেশ প্রচুর পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি গার্মেন্টস মালিকরা প্রতিনিয়ত বিপুল ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে আসছিলেন। এরকম কয়েকটি চক্র ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সক্রিয় রয়েছে ও প্রতিবছর শত কোটি টাকা মূল্যের দেশি পোশাক এসব চক্রের মাধ্যমে চুরি হয়ে যাচ্ছে।
র্যাব জানায়, গ্রেফতার ডাকাত চক্রটি কাভার্ডভ্যানের চালকদের সঙ্গে সখ্যতা করে বিভিন্ন লোভ দেখানো ও ডাকাতির মালামাল বিক্রয়ের টাকার একটি অংশ দেওয়ার কথা বলে। পরে চালক চক্রটির কথা মতো নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাছে নির্জন এলাকার ভেতর কিংবা সুবিধাজনক স্থানে কাভার্ডভ্যান পার্কিং করাতো। পরে ডাকাত দল বিশেষ কৌশলে কাভার্ডভ্যানের সিলগালা তালা না খুলে পাশের ওয়ালের নাট-বল্টু খুলে প্রত্যেক কার্টনের ভেতরে থাকা মালামালের ৩০ থেকে ৪০ ভাগ মালামাল রেখে আবার আগের মতো কার্টন সঠিকভাবে বাধাই করতো।
ডাকাত চক্রটি কার্টনের মালামালের ওয়েট ঠিক রাখার জন্য জুট কার্টনের ভেতর রেখে প্যাকেট করে। ফলে বন্দরে স্ক্যানিং কিংবা ওয়েট মেশিনে কোনো ধরনের অনিয়ম ধরা পড়ে না। এছাড়া মালামালসহ সম্পূর্ণ ট্রাক বা কাভার্ডভ্যানও মাঝে মাঝে তারা লুট করেছে বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। আসামিদের নামে বিভিন্ন থানায় গার্মেন্টস পণ্য চুরির একাধিক মামলা রয়েছে।
তিনি আরও জানান, সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রটি গার্মেন্টস মালামাল চুরি করার ফলে বিদেশি ক্রেতারা সঠিকভাবে ও সঠিক সময়ে মালামাল ডেলিভারি না পাওয়ার কারণে মূল্য পরিশোধ করতেন না এবং পরে ক্রয় আদেশ দিতেন না।
গ্রেফতারদের বিষয়ে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন বলে জানান র্যাবের এ কর্মকর্তা।
সিটিনিউজ সেভেন ডটকম//আর//