নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর পুরান ঢাকার সোয়ারীঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিন অপহরণকারীকে গ্রেফতার ও অপহৃত চার বছর বয়সী এক শিশুকে উদ্ধার করেছে র্যাব। গতকাল সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কেরাণীগঞ্জ থেকে চকলেট কিনে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে শিশুটিকে অপহরণ করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, অপহৃত শিশুর ফুফাতো ভাই বিল্লাল হোসেন (২২) ও তার সহযোগী দুই বন্ধু মো. সাগর (২২), মো. জুয়েল (২২)।
এসময় তাদের কাছ থেকে অপহরণ কাজে ব্যবহৃত সিম ও তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) বিষয়টি সোনালী খবরকে নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১০ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি ফরিদ উদ্দিন।
তিনি বলেন, অপহৃত শিশু নুনিয়া ইসলাম (৪)কে দীর্ঘদিন ধরে অপহরণের পরিকল্পনা করে আসছিলো তার আপন ফুফাতো ভাই মো. বিল্লাল হোসেন (২২)। আগেও বেশ কয়েকবার অপহরণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় বিল্লাল ও তার বন্ধুরা। কয়েকদিন আগে তারা রাস্তায় একটি বেনামী সীম পায়। সেই সীম পেয়ে তাদের পূর্বপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে। গতকাল সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বাসা ফাকা পেয়ে নুনিয়াকে চকলেট কিনে দেওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের করে নিয়ে যায়। কিছুক্ষন পর বিল্লাল তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ করে দেয়। পূর্বপরিকল্পিতভাবে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য শিশু নুনিয়াকে প্রথমে জিঞ্জিরা ফেরীঘাটে নিয়ে যায়। সেখানে বিল্লালের সঙ্গে যোগ দেয় তার সহযোগী দুই বন্ধু সাগর ও জুয়েল। পরবর্তীতে সাগর এসে তাদের পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক মুনিয়ার বাবা মো. দেলোয়ার হোসেন’কে রাত সাড়ে সাতটার গিকে কুড়িয়ে পাওয়া সিম দিয়ে ফোন করে। দেলোয়ার হোসেনকে তার ভাগিনা বিল্লাল জানায়, মেয়েকে জীবিত ফিরে পেতে হলে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে।
র্যাব-১০ অধিনায়ক আরও বলেন, একমাত্র হারিয়ে পাগল প্রায় পরিবারটির এতো টাকা দেওয়ার সামর্থ না থাকায় তারা থানায় অভিযোগ করেন। এরই প্রেক্ষিতে ছায়া তদন্ত শুরু করে র্যাব-১০। পরবর্তীতে রাতভর অভিযান শেষে মঙ্গলবার চকবাজার থানার সোয়ারীঘাট এলাকা থেকে অপহরণে জড়িত তিনজনসহ ভুক্তভোগী শিশুটিকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
ভিকটিমের বাবা অপরহণকারীদের দাবিকৃত টাকা সংগ্রহ করতে না পেরে নিরুপায় হয়ে ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। উক্ত সংবাদ প্রাপ্তির পর র্যাব অপহৃত ভিকটিম’কে উদ্ধার ও অপহরণকারীদের গ্রেফতারের লক্ষে ছায়া তদন্ত ও গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।
ফরিদ উদ্দিন আরও জানান, গ্রেফতার আসামিরা একই এলাকার বাসিন্দা ও ভুক্তভোগী দেলোয়ারের বোনের ছেলে। দীর্ঘদিন ধরে তারা বেকার। এক সঙ্গে অধিক টাকা পাওয়ার জন্যই এই অপহরণ করে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে।