তলিয়ে গেছে সিলেটের নিম্নাঞ্চল, বিপদসীমার ওপরে নদীর পানি

সিলেট প্রতিনিধি
ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে। এরই মধ্যে সিলেট সিটি করপোরেশনের বর্ধিতাংশ ও জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সীমান্তবর্তী উপজেলা কানাইঘাটে সুরমা নদীর পানি ১১ সেন্টিমিটার বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যান্য এলাকায় বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই অবস্থায় রয়েছে পানি।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, যেভাবে উজানের ঢলের পানি প্রবেশ করছে, তাতে আরও বেশ কিছু নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে।

এতে আতঙ্কে রয়েছেন নদীর তীরবর্তী বাসিন্দারা।

স্থানীয়রা জানান, রবিবার ভারী বর্ষণে সিলেট নগরীর ঘাসিটুলা, কানিশাইল, কুশিঘাট ও সিটি করপোরেশনের বর্ধিত এলাকা মোহাম্মদপুর, সৈয়দপুর, জাহানপুর, টেক্সটাইল রোড, মইয়ারচর, কুচাই, বদিকোণাসহ বেশ কয়েকটি এলাকা বন্যার পানিতে ডুবে গেছে।

এ ছাড়া নগরীর বাইরে সীমান্ত ও হাওরবেষ্টিত এলাকা কানাইঘাট, জকিগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, কোম্পানীগঞ্জ ও জৈন্তাপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চল বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এতে অনেক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সুরমা নদীর পানি কানাইঘাটে বিপদসীমা ১২ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটারের মধ্যে ১২ দশমিক ৮৬ সেন্টিমিটার; সিলেট সদরে ১০ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটারের মধ্যে ৯ দশমিক ৯৮ সেন্টিমিটার; জকিগঞ্জের অমলসিদে কুশিয়ারায় ১৫ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটারের মধ্যে ১৪ দশমিক ৩৮ সেন্টিমিটার; বিয়ানীবাজার শেওলায় কুশিয়ারায় ১৩ দশমিক ০৫ সেন্টিমিটারের মধ্যে ১১ দশমিক ৫৬ সেন্টিমিটার; ফেঞ্চুগঞ্জে কুশিয়ারায় ৯ দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটারের মধ্যে ৮ দশমিক ২৩ সেন্টিমিটার; জৈন্তাপুর সারিঘাটে সারিতে ১২ দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটারের মধ্যে ১১ দশমিক ১৭ সেন্টিমিটার ও কোম্পানীগঞ্জের ইসলামপুরে ধলাই নদীতে ৯ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই অবস্থায় রয়েছে।

সিটি করপোরেশনের সৈয়দপুর এলাকার বাসিন্দা মো. আব্দুল গণি বলেন, টেক্সটাইল রোডের বিভিন্ন জায়গায় কোমর সমান পানি রয়েছে। পানিতে ডুবে থাকার কারণে সকাল থেকে এ রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে না।

এ ছাড়া জাহানপুর, সৈয়দুপুর ও মোহাম্মদপুরের অধিকাংশ এলাকা পানির নিচে রয়েছে। দুদিন পরে ২১ জুন সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হবে। এভাবে বৃষ্টি হলে এ এলাকার অধিকাংশ বাসাবাড়ি পানিতে ডুবে যাবে। ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আসা কঠিন হবে বলে জানান তিনি।

আলুর তলের বাসিন্দা ব্যবসায়ী সাদিক মিয়া জানান, বৃষ্টি আর বন্যার পানির কারণে ব্যবসা একেবারে মাটি হয়ে গেছে। পানির মধ্যে কষ্ট করে দোকান খুললে ক্রেতা পাওয়া যায় না।

সৈয়দপুর আবাসিক এলাকার সৈয়দ জাহান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শারমিন আক্তার বলেন, বিদ্যালয়ের চারদিকে পানি রয়েছে। রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ি পানিতে ডুবে যাওয়ার কারণে শিক্ষার্থীরা ঠিকমতো আসতে পারছে না। এ স্কুলে ভোটকেন্দ্রও রয়েছে। এভাবে বৃষ্টি হলে স্কুলের ভেতরে যদি পানি ঢুকে, তাহলে কেন্দ্র রাখা মুশকিল হবে।

সিলেট সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সল কাদির জানান, সিটি করপোরেশনের নিচু কিছু এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করছি।

//এস//

rr
rr

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ওয়াশিংটনে মিউজিক ফেস্টিভ্যালের পাশে গোলাগুলি, নিহত ২
জুন ১৯, ২০২৩
পাহাড়ি ঢলে রংপুরের ২৫ গ্রাম তিন ফুট পানির নীচে
জুন ১৯, ২০২৩