নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা
ঢাকার আশুলিয়ায় স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যাকাণ্ডের চাঞ্চল্যকর ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি ফারুককে রংপুরের পীরগাছা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। কীভাবে হত্যা করেছেন সেই বিবরণও দিয়েছেন।
র্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখার সহযোগিতায় র্যাব-৪ ও র্যাব-১৩ এর যৌথ আভিযানিক দল গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ জুন) রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শুক্রবার (২৩ জুন) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-৪ সিপিসি -২ সাভার ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান।
কোম্পানি কমান্ডার লে. কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান জানায়,গত ২০ জুন দুপুরে ঢাকা জেলার আশুলিয়ার গাজীরচট নয়াপাড়া এলাকায় পঞ্চম তলার ভাড়া ফ্ল্যাট থেকে পোশাকশ্রমিক শিমু আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ বিষয়ে ভিকটিমের পরিবারের পক্ষ থেকে আশুলিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে র্যাব-৪ ছায়া তদন্ত শুরু করে।
তিনি জানায়,শিমু আক্তার গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানার মোগন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা। ছয় বছর আগে আসামি মো. ফারুক হোসেনের সাথে তার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় এবং বৈবাহিক জীবনে তাদের চার বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। তারা দুজনেই আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকার একটি গার্মেন্টসে শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
১০-১৫ দিন আগে গ্রামের বাড়িতে শিমুর সঙ্গে তার স্বামী ফারুকের বাকবিতণ্ডা হলে তাকে গলাটিপে ধরে নির্যাতন করা হয় বলে জানা যায়। পরবর্তী সময়ে ভিকটিম ও তার স্বামী আশুলিয়ার গাজীরচট নয়াপাড়া এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় উঠেন এবং পাশেই আরেকটি বাড়িতে ভিকটিমের বড় বোন লাবনী আক্তার ভাড়া থাকতেন।
তিনি আরও জানায়, গত ১৯ জুন রাতে ভিকটিমের বড় বোনের বাসায় রাতের খাবার শেষে ভিকটিম ও তার স্বামী ফারুক তাদের নিজ বাসায় চলে যান। পরদিন সকালে ভিকটিমের বড় বোন কর্মস্থলে একইসাথে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ভিকটিমকে ডাকার জন্য তাদের দারজার সামনে এলে ওই বাসার দরজা বাহির থেকে লাগানো অবস্থায় দেখতে পান। তখন ভিকটিমের বড় বোন লাবনী আক্তার ডাকাডাকি করলেও তাদের কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে এক পর্যায়ে বাসার দরজা খুলে রুমের ভেতর ঢুকলে ভিকটিমকে গলাকাটা রক্তাক্ত মৃতদেহটি ওড়না দিয়ে ঢাকা অবস্থায় দেখতে পান।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার আসামি ফারুক হোসেন জানান, ভিকটিমের সাথে তার পারিবারিক কলহের জেরে ধস্তাধস্তির এক পযায়ে ফারুক ক্ষিপ্ত হয়ে পেছন দিক থেকে হাতের কাছে থাকা ছুড়ি দিয়ে ভিকটিমকে গলায় আঘাত করেন এবং এতে গলা প্রায় দ্বিখণ্ডিত করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। পরে লাশটি বাথরুমে ওড়না দিয়ে ডেকে চার বছরের ছোট সন্তানসহ অন্যত্র আত্মগোপনের উদ্দেশে পালিয়ে যান।
//এস//