জাকির হোসেন:
গত কয়েকদিনে কাঁচামরিচের দামে নাজেহাল হয়েছেন ভোক্তারা। এ নিত্যপণ্যটির দাম যে এতটা বাড়তে পারে তা ছিল অকল্পনীয়। দেশের কোনো কোনো স্থানে কাঁচামরিচ কেজিপ্রতি এক হাজার টাকায়ও বিক্রি হয়েছে। ভারত থেকে আমদানির পর এর দাম কমতে শুরু করেছে। জানা গেছে, দাম কমার পর বাজার তদারকিতে নেমেছে সরকারের একাধিক সংস্থা। ভোক্তাদের প্রশ্ন, কারসাজি করে যখন কাঁচামরিচের দাম বাড়ানো হয়েছিল, তখন বাজার তদারকি সংস্থাগুলো নীরব ছিল কেন? আমদানির অনুমতি দেওয়ার পরও কারা কী প্রক্রিয়ায় কাঁচামরিচের বাজার অস্থির করে তুলেছে তা খতিয়ে দেখা জরুরি। কারসাজি করে যারা কাঁচামরিচের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়িয়েছে, তাদের দ্রুত চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা না হলে তারা অন্য পণ্যের ক্ষেত্রেও একই চেষ্টা চালাতে পারে। মাত্র কিছুদিন আগেই কারসাজি করে বাড়ানো হয়েছে বিভিন্ন মসলার দাম। আদা, পেঁয়াজসহ বিভিন্ন মসলা এখন সীমিত আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে। যে আদার কেজিপ্রতি আমদানি মূল্য ১২৯-১৩০ টাকা, তা বিক্রি হয়েছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। কারসাজি করে যারা এ মসলার দাম বাড়িয়েছে, তাদের কেন চিহ্নিত করা হচ্ছে না? চিনির সংকটেও ভোক্তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বস্তুত বহুদিন ধরেই নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। বিভিন্ন অজুহাতে অসাধু ব্যবসায়ীরা নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির করে তুললেও বাজার তদারকি সংস্থাগুলোর তৎপরতা দৃশ্যমান নয়। মূলত এ সংস্থাগুলোর দুর্বলতার কারণেই অসাধু ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া মুনাফা করার সুযোগ পায়। অভিযোগ রয়েছে, বাজার পর্যবেক্ষণে জড়িত অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের যোগসাজশের কারণেই অসাধু ব্যবসায়ীরা পার পেয়ে যাচ্ছে। কাজেই সরষের ভেতরের ভূত তাড়াতে হবে।
জীবনযাত্রায় বাড়তি ব্যয়ের কারণে দিশেহারা হয়ে পড়েছে মানুষ। সবচেয়ে বেশি চাপে রয়েছে সীমিত ও স্বল্প আয়ের মানুষ। দুঃখজনক হলো, সরকারের পক্ষ থেকে পণ্যের দাম বেঁধে দেওয়া হলেও তা কার্যকর হয় না। পণ্য ও সেবার দাম যাতে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে, সেজন্য সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা মনে করি, অসাধু ব্যবসায়ীদের শনাক্ত করতে এখনই জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। কেউ যাতে অতিরিক্ত মুনাফা করার সুযোগ না পায় তা কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করতে হবে।
জাকির হোসেন, সম্পাদক, সিটিনিউজ সেভেন ডটকম