ভাটারা থানাধীন মাদানী রোডে অবস্থিত নূর জুয়েলার্স নামক একটি স্বর্ণের দোকান। দোকানটির মালিক ফয়েজ আহমেদ। গত ১৪ এপ্রিল মালিক এবং কর্মচারীরা দোকান ভালো করে তালাবদ্ধ করে ঘন্টাখানেকের জন্য মসজিদে জুম্মার নামাজ আদায় করতে যান।
নামাজ শেষে ফিরে দেখেন দোকানের শাটার এবং কলাপসেবল গেইটের তালা কাটা। ভিতরে সাজিয়ে রাখা স্বর্ণালংকারও নেই। পরে এ ঘটনায় ভাটারা থানায় চুরির মামলা করেন প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার ফয়েজ আহমেদ।
মামলাটি থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত করে। দীর্ঘদিন তদন্তের পর ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা এবং চট্টগ্রামে অভিযান চালিয়ে চুরিকাণ্ডে জড়িত কয়েকজনকে সনাক্ত ও গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এই চোর চক্রটিতে রয়েছে ৮ থেকে ১২ জন সদস্য। তারা সংঘটিত হয়ে বিভিন্ন জায়গায় এমন দুর্ধর্ষ চুরি করে পালিয়ে যেতে অত্যন্ত পারদর্শী। এই চক্রের সদস্যদের নামে ডজনখানেক মামলা থাকলেও তারা ভাসমান হওয়ায় এবং এক জায়গায় না থাকায় তাদের ধরতে হয় প্রচুর বেগ পেতে হয় গোয়েন্দা পুলিশকে।
এক পর্যায়ে ডিবি লালবাগের ডিসি মশিউর রহমানের নির্দেশনায় গোয়েন্দা লালবাগ জোনাল টিমের এডিসি মোস্তাফা কামালের নেতৃত্বে ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় চোর চক্রের ৮ জন দুর্ধর্ষ সদস্যকে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় নগদ ১২ লাখ টাকা এবং কয়েক ভরি স্বর্ণালঙ্কার।
গ্রেপ্তারকৃতদের নাম- মো. ফারুক, আব্দুল্লাহ আল মামুন, মো. শরিফুল ইসলাম ওরফে জামাই শরীফ, আমির হোসেন, মোকাররম হোসেন ওরফে মনু, ইয়াছিন আরাফাত মোল্লা, মো. পারভেজ, নুরে আলম সুমন ওরফে ডিবি সুমন।
গোয়েন্দা পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, এই চোর চক্রের মূল হোতা নুরে আলম সুমন ওরফে ডিবি সুমন। তিনি নিজেকে গোয়েন্দা পুলিশের সোর্স হিসেবে পরিচয় দিয়ে প্রভাব বিস্তার করতেন। তার নেতৃত্বে আরও কয়েকটি চুরির ঘটনার বিষয়ে জানতে পেরেছে পুলিশ। সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের ডিসি মশিউর রহমান শনিবার বলেন, গ্রেপ্তার চোর চক্রের সদস্যদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী শনিবার মামলার বাদিকে উদ্ধার হওয়া ১২ লাখ টাকা বুঝিয়ে দিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) হারুন অর রশিদ।