মোরেলগঞ্জে বেড়েই চলছে কিশোর গ্যাংয়ের উপদ্রব
সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৩
আজ দেশে ফিরছেন বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ
সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৩
নিজস্ব প্রতিবেদক
এসএসসি পর্যন্ত পড়াশুনা করা মো. মাসুদ রানা ওরফে সাকিব খাঁন (৩৯) পেশায় কৃষক। কিন্তু স্টারমেকার অ্যাপসে সেনা কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন নারীর সাথে সখ্যতা গড়ে তুলেন। পরে ভাল চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকর হাতিয়ে নিতেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। ধরা পড়েছেন পুলিশের হাতে।
এক নারী ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে মাসুদ রানা ওরফে সাকিব খাঁনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) পিবিআই সদর দপ্তরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আবু ইউসুফ জানান, মাসুদ রানা স্টারমেকার অ্যাপসে নিজেকে সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন পরিচয়ে গান পরিবেশন করেন। অ্যাপসে তার গানের কমেন্ট বক্সে ভুক্তভোগী ওই নারী কমেন্ট করেন। ওই কমেন্টের সূত্র ধরে দুই জনের মধ্যে আলাপ আলোচনা শুরু হয়।
মাসুদ নিজেকে আর্মি অফিসার দাবি করে ওই নারীকে জানান, তার বাড়ি রাজশাহীতে। পরে তাদের দুই জনের মধ্যে অনলাইনে বন্ধুত্ব হয়। ভুক্তভোগী নারী সরকারি প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক। তবে প্রতারক মাসুদ তাকে আরও ভালো চাকরির প্রলোভন দেখান। মাসুদের প্রলোভনের ফাঁদে পা দিয়ে ভিকটিম তাকে ২ লাখ টাকা দেন।
তিনি আরও জানান, মাসুদ তাকে চাকরি না দিয়ে আরও টাকা দাবি করলে ভুক্তভোগী নারী বুঝতে পারেন তিনি প্রতারিত হচ্ছেন। তখন তিনি মাসুদের কাছে টাকা ফিরিয়ে দেয়ার জন্য বলেন। এতে প্রতারক রাজি হয়ে ভুক্তভোগী নারীকে ৭ জুলাই যশোরের চাঁচড়া মোড়ের মধুমতি হোটেলে যাওয়ার কথা বলেন।
মাসুদের কথামতো ওই নারী সেখানে যান। তখন মাসুদ তাকে এক গ্লাস জুস খেতে দেন। জুস খাওয়ার পর ওই নারী কোন কিছু না বুঝেই মাসুদের কথামতো ১টি স্বর্ণের চেইন, ১ জোড়া স্বর্ণের কানের দুল, ১টি স্বর্ণের আংটি ও ১টি স্যামসাং মোবাইল তার হাতে তুলে দেন। মাসুদ নারীর সামনে থেকে তার এসব স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ফোনটি নিয়ে চলে যান। এরপর এসব বিষয়ে গত ১৫ জুন পিবিআই যশোর জেলা ইউনিটে ভুক্তভোগী এ বিষয়ে একটি অভিযোগ করেন। অভিযোগের পর পুলিশ সুপার রেশমা শারমিনের নির্দেশে ঘটনার ছায়াতদন্ত শুরু করে পিবিআই।
তদন্তকালে পিবিআই জানতে পারে, প্রতারক মাসুদ পেশায় একজন কৃষক। তিনি দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। পেশায় কৃষক হলেও মূলত স্টারমেকার অ্যাপসে আর্মি ক্যাপ্টেন পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন মেয়ের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন। পরে ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে নেয়। আগেও সে একাধিক মেয়ের সঙ্গে এই প্রতারণা করেন।
পিবিআই’র কর্মকর্তা আবু ইউসুফ বলেন, তদন্তের একপর্যায়ে পিবিআই যশোর জেলা ইউনিটের একটি দল শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) পাবনার ভাঙ্গুরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাসুদকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে ভুক্তভোগী নারীর মোবাইল ফোনটি জব্দ করা হয়।
এছাড়া তার দেয়া তথ্যে ভুক্তভোগী স্বর্ণালংকার রোববার খুলনা থেকে জব্দ করা হয়। পরে ওই নারী বাদী হয়ে মাসুদের বিরুদ্ধে যশোরের কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। এছাড়া একইদিন মাসুদকে আদালতে তুললে তিনি ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
//এস//
