নোয়াখালী প্রতিনিধি
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে আব্দুল কুদ্দুস(৫১) নামে এক ব্যক্তিকে বৈদ্যুতিক শক দিকে হত্যা করা হয়েছে। পরকীয়া প্রেমের জেরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ডটি ঘটানো হয়েছে বলে জানা গেছে। বুধবারের এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী ও তার পরকীয়া প্রেমিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে নোয়াখালীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মহিবুল্যার আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন তারা।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন, নিহতের স্ত্রী সুরমা আক্তার ওরফে বিবি আছিয়াকে (৩৮) ও তার পরকীয়া প্রেমিক উপজেলার লতিফপুর গ্রামের বাসিন্দা ও আবুধাবি প্রবাসী মো.ইসমাইল (৩৫)।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, কুদ্দুসের বসতঘরে টাইলস করার সময় তার স্ত্রী সুরমা আক্তার টাইলস মিস্ত্রি ইসমাইলের সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। পরে ইসমাইল বিদেশ চলে গেলেও তাদের মধ্যে যোগাযোগ অব্যাহত থাকে। গত ৬ সেপ্টেম্বর পরিবারের কাউকে কিছু না জানিয়ে ইসমাইল গোপনে দেশে ফিরে আসে। এরপর সে পাশ্ববর্তী মোহাম্মদুপর গ্রামে তার এক দূরসম্পর্কের খালার বাসায় আত্মগোপনে থাকে। সেখান থেকে সে পরকীয়া প্রেমিকা সুরমার সঙ্গে যোগাযোগ করে। গত মঙ্গলবার রাতে কুদ্দুস ঘরের বাহিরে থাকাকালীন তার স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিক ইসমাইল ঘরে ঢুকে লুকিয়ে থাকে। এরপর রাত ১১টার দিকে সুরমা ইসমাইলকে ডেকে ছাদে নিয়ে যায়। নিচে নামার সময় ইসমাইল ছাদে থাকা বৈদ্যুতিক সকেটে লাইন দিয়ে তার নিয়ে নিচে নামে। এরপর কুদ্দুসের শয়ন কক্ষে ঢুকে তার স্ত্রী সুরমা স্বামীর পায়ে বৈদ্যুতিক ওই তার পেঁচিয়ে এক মাথার সুইচের সঙ্গে বৈদ্যুতিক সংযোগ দিয়ে স্বামীর মৃত্যু নিশ্চিত করে।
পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক এক ঘন্টা পর সুরমা চিৎকার শুরু করে বলে তাকে আটক করে ডাকাত দল তার স্বামীকে হত্যা করেছে। খবর পেয়ে পুলিশ বুধবার ভোর রাতের দিকে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। একইসঙ্গে সুরমাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় যায়। পরে পুলিশের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে মিলে স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন তিনি। পরে তার তথ্য অনুযায়ী পরকীয়া প্রেমিককেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এ ব্যাপারে বেগমগঞ্জ থানার ওসি আনোয়ারুল ইসলাম জানান, ঘটনার শুরু থেকেই একটা সন্দেহ কাজ করছিল। তাই তদন্তে নেমে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিকেলে আদালতে কুদ্দুস হত্যা মামলায় দায় স্বীকার করেছে নিহতের স্ত্রী ও তার পরকীয়া প্রেমিক ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পুলিশ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বৈদ্যুতিক তারটি উদ্ধার করেছে।
//এস//