নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বছিলা গার্ডেন সিটি হাউজিং এলাকায় শুক্রবার সন্ধ্যায় সশস্ত্র মহড়া ও পরপর বেশ কয়েকটি ছিনতাইয়ের অভিযোগে সন্দেভাজন কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৮টা পর্যন্ত ছিনতাইকারীরা সংঘবদ্ধ হয়ে প্রকাশ্যে একের পর এক ছিনতাই করে। সামনে যাদের পায় তাদেরই কোপায়। সঙ্গে থাকা সবকিছু ছিনিয়ে নেয়। এছাড়া রাস্তার পাশের ১৫ থেকে ২০টি দোকানের মালামাল লুটপাট করে এবং ভাঙচুর চালায়। ছিনতাইকারীদের একটি দল অস্ত্র হাতে বসিলা বাজারের সামনে থেকে ছিনতাই শুরু করে। মহড়া ও ছিনতাই শেষ হয় অন্তত দুই কিলোমিটার দূরে চন্দ্রিমা হাউজিং এলাকায়। পথচারী, নদীর পাশের ওয়াকওয়েতে হাঁটতে আসা দর্শনার্থীদের মোবাইল ফোন ও টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেয় তারা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বসিলা এলাকায় প্রায় প্রতিদিনই চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এসব নিয়ন্ত্রণে মাঝে মাঝে পুলিশ টহলও দেয়। কিন্তু যখনই পুলিশ চলে যায় তখনই ছিনতাই করে দুর্বৃত্তরা।
ভুক্তভোগীরা বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় একাধিক ছিনতাইয়ের ঘটনার সময় জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করেও তাৎক্ষণিক পুলিশি সহায়তা পাওয়া যায়নি। ফোন করার প্রায় চার ঘণ্টা পর পুলিশের একটি টহল গাড়ি আসে।
শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বুড়িগঙ্গা নদীর পাশে ওয়াকওয়েতে হাঁটতে গিয়ে ছিনতাইকারীদের হামলার শিকার হওয়া চন্দ্রিমা হাউজিং এলাকার বাসিন্দা নুসরাত আফরিন বলেন, শুক্রবার আমি বাসার পাশে ওয়াকওয়েতে হাঁটতে যাই। হঠাৎ কয়েকটা ছেলে এসে ঘিরে ধরে। গলায় অস্ত্র ধরে মোবাইল ফোন ও টাকা দিতে বলে। পরে একজন আমার ব্যাগ খুলে মোবাইল ফোন নিয়ে নেয়। কিন্তু টাকা না থাকায় শরীরে তল্লাশির চেষ্টা করে। পা ও পিঠে আঘাতও করে। মোবাইল ফোন নেয়ার পর একজন লক খুলে দিতে বলে। এ সময় দৌড় দিলে আমার কপালে ও হাতে কোপ দেয়।
আরিফুর রহমান নামের একজন দোকানি বলেন, আমার দোকানের ক্যাশ বক্স থেকে ৭ হাজার নগদ, এক কেস পানির বোতলসহ বিভিন্ন মালামাল নিয়ে গেছে। সব মিলিয়ে আমার ক্ষতি অন্তত ১২ হাজার টাকা। অস্ত্রের মুখে দোকানের সামনে বসা এক কাস্টমার ও আমার ভাগনের মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ নিয়ে গেছে।
নীরব নামের আরেকজন ভুক্তভোগী বলেন, তিনি পেশায় রংমিস্ত্রি। কাজ শেষে চায়ের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলার সময় এক ছেলে এসে ঘাড়ে চাপাতি ধরে মোবাইল ফোন চায়। দিতে না চাওয়ায় আমাকে মারধর করে। মাথায় আঘাত করে, পায়েও কোপ দেয়। পরে মোবাইল নিয়ে যায়। আমার বন্ধুকেও মারধর করে। তাকে কোমরের বেল্ট দিয়ে পেটায়।
এ বিষয়ে মোহাম্মদপুর থানার ওসি মো. মাহফুজুল হক ভূঁইয়া বলেন, কিশোর গ্যাং সদস্যরা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানতে পেরেছি। সন্দেহভাজন কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনা সম্পর্কে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ভুক্তভোগীরা থানায় এলে মামলা নেয়া হবে।
//এস//