নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা
মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ে ইজিবাইক চালক মোস্তফা মাদবর ওরফে মোস্তফা (১৮) হত্যাকাণ্ডের ক্লুলেস মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে র্যাব-১০। একই সঙ্গে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মিরাজুল ইসলাম (২৮), স্বপন ফরাজী (২৮) ও পাপ্পু সরদার (২৪)। গতকাল বৃহস্পতিবার বরিশালের গৌরনদী ও মুন্সিগঞ্জের পদ্মা উত্তর থানার মাওয়া চৌরাস্তা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
শুক্রবার (৬ অক্টোবর) এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১০ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দীন এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, লৌহজং থানার দক্ষিণ মেদেনী মন্ডল এলাকার বাসিন্দা মোস্তফা মাদবর ইজিবাইক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। গত ১ অক্টোবর বিকেলে তিনি ইজিবাইক নিয়ে যাত্রী পরিবহনের জন্য বাসা থেকে বের হন। এরপর প্রতিদিনের মতো রাতে বাসায় ফিরে না আসায় পরিবারের লোকজন তাকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করতে থাকেন। এক পর্যায়ে ২ অক্টোবর সকালে ফেসবুকে পরিবারের লোকজন জানতে পারেন লৌহজংয়ের হলদিয়া এলাকার এক ডোবার পাশে গলায় রশি পেঁচানো অবস্থায় অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির মরদেহ পড়ে আছে।
পরে মোস্তফার বাবা ও স্বজনরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় মোস্তফার বাবা আব্দুল হক মাদবর একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দীন বলেন, এ ঘটনায় জড়িত আসামিদের আইনের আওতায় আনতে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও ছায়াতদন্ত শুরু করে র্যাব। এরই ধারাবাহিকতায় ৫ অক্টোবর তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় বরিশালের গৌরনদী বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডের হোতা মিরাজুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যমতে মাওয়া চৌরাস্তা এলাকায় অভিযান চালিয়ে স্বপন ফরাজী ও পাপ্পু সরদারকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে অতিরিক্ত ডিআইজি ফরিদ উদ্দীন বলেন, গ্রেফতার মিরাজ এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী। সে তার সহযোগী স্বপন ও পাপ্পুকে নিয়ে মোস্তফাকে হত্যা করে তার ইজিবাইক ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেন। সে অনুযায়ী ১ অক্টোবর মিরাজ, স্বপন ও পাপ্পু মাওয়া চৌরাস্তা এলাকা থেকে মোস্তফার ইজিবাইকে যাত্রী হিসেবে ওঠেন।
সুবিধাজনক স্থান হলদিয়া এলাকায় পৌঁছালে তারা মোস্তফাকে ইজিবাইক থেকে নামতে বলেন। ইজিবাইক থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে স্বপন মোস্তফার গলায় রশি পেঁচিয়ে ধরেন। এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এ সময় পাপ্পু মোস্তফার দুই পা চেপে ধরেন এবং মিরাজ মুখ মাটির সঙ্গে চেপে ধরে তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন।
এরপর মরদেহ ঘটনাস্থলের পাশে একটি ডোবায় ফেলে রেখে মোস্তফার ইজিবাইক নিয়ে পালিয়ে যান তারা।
গ্রেফতাররা ইজিবাইক চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য। পাপ্পুর বিরুদ্ধে ঢাকার কদমতলী থানায় একটি ছিনতাই মামলা এবং মিরাজের বিরুদ্ধে বরিশালের উজিরপুর থানার একটি মামলা আদালতে বিচারাধীন। গ্রেফতারদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।
//এস//