নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চোরাচালান প্রতিরোধে পরিচালিত এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) ও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা ( এনএসআই) এর যৌথ অভিযানে ৩ কেজি ২৩১ গ্রাম স্বর্ণ সহ এক যাত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃদের নাম-মো. সুমন হোসেন(৪৩)।
গতকাল বিকাল পাঁচটার দিকে তাকে বিমানবন্দরের কনকোর্স হলের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আটক করা হয়।
রবিবার ( ১৫ অক্টোবর ) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক।
তিনি বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এপিবিএন ও এনএসআইউ এর একটি যৌথ একটি দল শারজাহ থেকে আসা যাত্রী সুমন হোসেনকে আটক করে। এয়ার এরাবিয়ার একটি ফ্লাইটে তিনি শনিবার বিকেলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরন করেন।
বিমানবন্দরে অবতরনের পর সকল কার্যক্রম শেষে সুমন কাস্টমস গ্রীন চ্যানেল পার হওয়ার সময়ে কনকোর্স হলের সামনে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এই যাত্রী তার পায়ুপথে স্বর্ণ থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
এসময় তাকে কাস্টমসের বডি স্ক্যানারে স্ক্যান করানো হলে তার কথার সত্যতা পাওয়া যায়। পরবর্তীতে তার দেহের কোন অংশে স্বর্ণ লুকানো আছে তা নিশ্চিত হতে রাজধানীর উত্তরা ১ নম্বর সেক্টর একটি ক্লিনিকে এক্সরে পরীক্ষার করানো হয়। এক্সরে পরীক্ষার পর যাত্রীর পায়ুপথ ও তলপেটে স্বর্ণের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত করেন ডাক্তার। এরপর যাত্রীকে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের বিমানবন্দর অফিসে নিয়ে আসা হয়। বিমানবন্দরে নিয়ে আসার পর যাত্রী সুমন ধীরে ধীরে প্রাকৃতিক কার্যের মাধ্যমে তার পায়ুপথ ও তলপেটে লুকিয়ে রাখা ডিম্বাকৃতির পেস্ট গোল্ডের প্যাকেট বের করতে থাকেন। এ সময় অভিযুক্ত মোট ১৩ টি ডিম্বাকৃতি গোল্ড প্যাকেট বের করে নিজ হাতে ধৌত করেন। এই প্যাকেটগুলি নীল রঙ এর প্লাস্টিকে মোড়ানো ছিল। ওজন করা হলে প্রতিটি প্যাকেটে ২৩২ গ্রাম করে মোট ০৩ কেজি ১৬ গ্রাম স্বর্ণ পাওয়া যায়।
তিনি আরও বলেন, এছাড়াও যাত্রীর পোশাকের পকেট থেকে আরো ১ টি গোল্ডবার(১১৬ গ্রাম) এবং ৯৯ গ্রাম স্বর্ণালংকার সহ মোট ৩ কেজি ২৩১ গ্রাম স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। পেস্ট গোল্ড সহ অন্যান্য গোল্ডের রাসায়নিক পরীক্ষার মাধ্যমে উদ্ধারকৃত পদার্থ স্বর্ণ বলে নিশ্চিত করা হয়। এই স্বর্ণের আমদানী এবং শুল্ক পরিশোধের কোনো ধরনের রশিদ তিনি এসময় দেখানে ব্যর্থ হন এবং স্বীকার করেন যে তিনি স্বর্ণ পাচারকারী চক্রের হয়ে পাচারের চেষ্টা করছিলেন।
যাত্রী মো. সুমনকে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, যে শারজাহ প্রবাসী মিজান এবং আনোয়ার অর্থের বিনিময়ে তাকে এই স্বর্ণ পাচারের জন্য প্রস্তাব করলে তিনি তাতে রাজি হন এবং বিশেষ কৌশলে এই স্বর্ণ নিজের দেহে বহন করে বাংলাদেশে নিতে আসেন। এই কাজে সফল হলে তার ৭০ হাজার টাকা পাওয়ার কথা ছিল।
অভিযুক্ত যাত্রী মো. সুমন হোসেন মুন্সিগঞ্জ সদরের বাসিন্দা। ব্যাগেজ সুবিধা ব্যবহার করে পন্য আমদানীর জন্য তিনি নিয়মিত বিদেশে যাওয়া আসা করেন। তার বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
//এস//