রাজধানীর ধোলাইপাড়ে বাসে আগুন
নভেম্বর ২৯, ২০২৩
স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অবশ্যই দলীয় শৃঙ্খলা মাথায় রাখতে হবে : তথ্যমন্ত্রী
নভেম্বর ২৯, ২০২৩

পরকীয়ার গোপন তথ্য ফাঁস: প্রেমিককে হত্যা করে মাটিচাপা, ঘাতক প্রেমিকা ধরা 

নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা

ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের বাঘাশুর পশ্চিম পাড়া এলাকার সিংহ নদী থেকে অজ্ঞাত এক যুবকের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

সংস্থাটি বলছে, পরকীয়া প্রেমের বিষয়টি স্থানীয়দের কাছে ফাঁস করে দেওয়ার পরকীয়া প্রেমিকার পরিকল্পনায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। পরবর্তীতে ঘাতকরা সিংহ নদীতে লাশ মাটি চাপা দিয়ে দেয়।

হত্যা ও লাশ গুমে জড়িত দুজনকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই। তারা হলেন-আখি আক্তার (২৪) ও আলাল মোল্লা (৩৫)। এই ঘটনায় আখির স্বামী ওমর ফারুক আগেই থানা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন।

গত ২২ নভেম্বর তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার দুই আসামি রুমান শিকদারকে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। নিহত রুমান শিকদার একই এলাকার আবু সিকদারের ছেলে।

বুধবার ( ২৯ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে ঢাকা জেলার ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার মো. কুদরত—ই—খুদা এ তথ্য জানান।

ঘটনার বিষয়ে পুলিশ সুপার কুদরত বলেন, ঘাতক আখি আক্তার ও নিহত রোমান শিকদার (৩৯) প্রতিবেশী। আখির স্বামী ওমর ফারুক প্রবাসী। এই সুযোগে প্রতিবেশী রুমানের সাথে পরকিয়া প্রেমে জড়িয়ে পরেন আখি। বিদেশ থাকাবস্থায় স্ত্রীর পরকিয়া প্রেমের বিষয়টি জানতে পেরে দেশে চলে আসেন ওমর ফারুক। দেশে এসে আখিকে বাড়ী থেকে বের করে দেন। পরবর্তীতে দুই স্বজনদের মধ্যস্থতায় মীমাংসা করে আখি ও ওমর ফারুক সংসার শুরু করে। কিছুদিন যেতে না যেতেই আখি আবারও রুমানেরব সঙ্গে পরকিয়া প্রেমে জড়িয়ে পরেন। এরপর চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে রুমানের হাত ধরেপালিয়ে অন্যত্র বাবসা কিছুদিন বসবাস করেন আখি। পরবর্তীতে ফারুক অনেক খোঁজাখুঁজির পর আখি ও তার প্রেমিক রুমানের সন্ধান পায়। পরবর্তীতে স্বজন ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে ফিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে স্থানীয়রা রুমানকে তার প্রেমিকা আখিকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে রুমান তা অস্বীকার করেন। যার ফলে আখি আক্তার তার সমস্ত অন্যায় অনৈতিক কর্মকান্ডের জন্য স্বামী ফারুকের নিকট ক্ষমা ফেয়ে সংসারে ফিরে যান। এই সময়ে তাদের বাসা ভাড়া করে থাকা ও পরকীয়ার বিষয়টি রুমানকে গোপণ রাখতে অনুরোধ করেন। রুমান অনুরোধ উপেক্ষা করে বিষয়টি এলাকায় বিভিন্ন জনের কাছে বলাবলি করে আসছে। আর এতেই আখি ও ফারুক ক্ষিপ্ত হয়ে রুমান হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী চলতি বছরের ২২ মার্চ গভীর রাতে মোবাইলে ফেনের মাধ্যমে আখি আক্তার প্রেমিক রুমানকে ঘরে ডাকে। এরপর কথা বলার একপর্যায়ে পিছন থেকে লোহার রড দিয়ে রুমানেত আঘাত করে হত্যা করেন আখি ও তার স্বামী ফারুক। নিহতের লাশ বস্তাবন্দি করে গুমের উদ্দেশ্যে প্রতিবেশী আলাল মোল্লার সহযোগিতায় বাড়ির পাশের সিংহ নদীতে লাশটি মাটি চাপা দিয়ে দেয়।

যে ভাবে লাশ উদ্ধার ও পরিচয় নিশ্চিত; রুমনকে হত্যা করে মাটি চাপা দেওয়ার এক মাস পর চলতি বছরের ২১ মে সিংহ নদীতে নদী খননের কাজ চলার সময়ে নদীতে কাদা মাটি কাটার সময়ে ভেকুতে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির কঙ্কাল উঠে আসে। বিষয়টা স্থানীয়রা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ জানালে দক্ষিন কেরাণীগঞ্জ থানা পুলিশ কঙ্কালের সঙ্গে একটি অস্পষ্ট নেভীব্লু রংয়ের শার্টের অংশ বিশেষ যুক্ত ছিল। কঙ্কাল উদ্ধারের খবর পেয়ে নিহতের স্ত্রী-সন্তানও স্বজনরা গিয়ে প্রাথমিকভাবে পেয়ে কঙ্কালটির সঙ্গে থাকা নেভি ব্লু রংয়ের শার্টের অংশবিশেষ দেখে এটি রুমানের বলে দাবি করেন।
পরবর্তীতে উপপরিদর্শক ( এসআই) মাইদুল ইসলাম কঙ্কালের সুরতহাল প্রস্তুত করেন এবং ডিএনএ প্রোফাইলের জন্য কঙ্কালটি স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালে মর্গে পাঠায়। পাশাপাশি এসআই মাইদুল বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি ৫ মাস থানা পুলিশ তদন্ত শেষে দায়িত্ব পায় পিবিআই। গত আগস্টের ২২ তারিখ মামলাটি তদন্ত শুরু করে পিবিআই’র ঢাকা জেলার একটি দল। এর আগে কঙ্কাল উদ্ধারের পর নিহতের স্ত্রী সেলিনা আক্তার ডিএনএ পরীক্ষার আবেদন করেন। পরবর্তীতে নিহতের মেয়ে নুছরাত (১২) ও ছেলে সাইফের (৬) ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে সিআইডি। পরবর্তীতে ডিএনএ পরীক্ষায় রুমানের পরিচয় নিশ্চিত হয়।

//এস//

rr
rr

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *