জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালে আগুন
মার্চ ৯, ২০২৪
কুমিল্লা-ময়মনসিংহ সিটিসহ ২৩৩ নির্বাচনে চলছে ভোটগ্রহণ
মার্চ ৯, ২০২৪

সুপ্রিম কোর্ট বারে মারামারি :২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ সালের নির্বাচনে ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে হট্টগোল, হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনায় রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মামলায় স্বতন্ত্র থেকে সম্পাদক প্রার্থী অ্যাডভোাকেট নাহিদ সুলতানা যুথি, বিএনপির প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের স্ত্রী।

শুক্রবার রাতে সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুর রহমান চৌধুরী সাইফ তাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর রাতেই বিএনপির ব্যারিস্টার ওসমান চৌধুরীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

মামলায় অন্য আসামিরা হলেন— অ্যাড. মো. জাকির হোসেন ওরফে মাসুদ (৫৫), অ্যাডভোকেট শাকিলা রৌশন, অ্যাডভোকেট কাজী বশির আহম্মেদ , ব্যারিস্টার উসমান, অ্যাড. আরিফ, অ্যাডভোকেট সুমন, অ্যাডভোকেট তুষার, রবিউল, ব্যারিস্টার চৌধুরী মৌসুমী ফাতেমা (কবিতা), সাইদুর রহমান জুয়েল (৪০), অলিউর, যুবলীগ নেতা জয়দেব নন্দী, মাইন উদ্দিন রানা, মশিউর রহমান সুমন, কামাল হোসেন, আসলাম রাইয়ান, অ্যাডভোকেট তরিকুল ও অ্যাডভোকেট সোহাগ। এ ছাড়া মামলায় ৩০/৪০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজহারে বলা হয়, ‘আসামিরা ১নং আসামির নিদের্শে এবং প্রত্যক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার সমিতির নিচ তলার শহিদ শফিউর রহমান মিলনায়তন রুমের দরজা ৩নং আসামি ১, ২, ও ৪ নং আসামির পরামর্শক্রমে সু-কৌশলে ও ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে অডিটোরিয়ামের দড়জা খুলে দিলে অস্ত্র হাতে জোরপূর্বক বেআইনি জনতাবদ্ধে অনাধিকার প্রবেশ করে অকথ্য ভাষায় আমাকেসহ নির্বাচন সাব-কমিটির অন্যান্য সদস্যদের গালিগালাজ করে। ৫ ও নং আসামিদ্বয়ের হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথার মাঝ বরাবর আঘাত করলে আমি বাধা দিতে গেলে আমার বাম পাশের কানের উপরে মাথার অংশে স্বজোরে আঘাত করলে আমি মারাত্মকভাবে জখমপ্রাপ্ত হই। অন্যান্য আসামিরা কাঠের লাঠি, কাঠের ও প্লাস্টিকের চেয়ার দিয়ে অতর্কিতভাবে এলোপাথারী মারপিট করে ও পা দিয়ে আঘাত করে আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে এবং আমার পরিহিত কাপড় ছিড়ে ফেলে। উক্ত আসামিরা আমার সঙ্গীয় ব্যারিষ্টার জাকারিয়া হাবিবকে মারপিট করে আহত করে। একপর্যায়ে ৫নং আসামির হাতে থাকা কাঠের লাঠি দিয়ে ব্যারিষ্টার জাকারিয়া হাবিবকে আঘাত করে তাহার ডান হাতের আঙ্গুল ভেঙে ফেলে ও তাহার পরিহিত কাপড় ছিড়ে ফেলে এবং তাহার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। ১নং আসামী এড, রিনা বেগমকে চরথাপ্পর ও হুমকি দেয় এবং ১১নং আসামি গলায় চেপে শ্বাস রোধ করে হত্যা করার চেষ্টা করে। অন্যান্য অজ্ঞাতনামা আসামিরা অডিটোরিয়ামের ভিতরে এলোপাথারী ভাংচুর ও অরজকতা সৃষ্টি করে। যাহার ফলে নির্বাচনী দায়িত্বরত সদস্যদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়ে নির্বাচনী অন্যান্য কার্যক্রম সম্পূর্ণ রূপে ভন্ডুল হয়ে যায়। একপর্যায়ে সকল আসমিসহ ১নং আসামি নিজে অস্ত্রের মুখে নির্বাচন সাব-কমিটির প্রধান বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. আবুল খায়েরকে ভোট গণনা ছাড়াই সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত ঘোষণা করার জন্য বাধ্য করে। নির্বাচন সাব-কমিটির সকল সদস্য জীবন বাঁচানোর উদ্দেশ্যে ভোট গণনার কাজ না করেই চলে যেতে বাধ্য হয়। আমার পরিহিত প্যান্টের ডান পকেটে থাকা ১৫ হাজার টাকা ১২ নং আসামী নিয়ে যায়। সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবি সমিতির সি.সি টিভি ফুটেজে ঘটনার বিষয়ে সমস্ত ধারণ করা আছে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও উক্ত ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ভোট গণনা এবং ফলাফল ঘোষণার কাজ আসামিরা সম্পন্ন হতে না দিয়ে ১নং আসামিকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক হিসাবে নির্বাচিত ঘোষণা করার অবৈধ দাবিতে তাহার নেতৃত্বে উপরোক্ত ঘটনা ঘটায়।’

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ সালের নির্বাচনে দুইদিনে ৭ হাজার ৮৮৩ জন আইনজীবীর মধ্যে ৫ হাজার ৩১৯ আইনজীবী তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।

আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেলের প্রার্থীরা হলেন— সভাপতি পদে আবু সাঈদ সাগর, সম্পাদক শাহ মঞ্জুরুল হক, দুই সহ-সভাপতি পদে রমজান আলী শিকদার ও দেওয়ান মোহাম্মদ আবু ওবায়েদ হোসেন সেতু, কোষাধ্যক্ষ পদে মোহাম্মদ নুরুল হুদা আনসারী, দুটি সহ-সম্পাদক পদে হুমায়ুন কবির ও হুমায়ুন কবির পল্লব। সাতটি সদস্য পদে সৌমিত্র সরদার রনী, মো. খালেকুজ্জামান ভূঁইয়া, রাশেদুল হক খোকন, মাহমুদা আফরোজ, বেলাল হোসেন শাহীন, খালেদ মোশাররফ রিপন, রায়হান রনী।

বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেল থেকে মনোনীত প্রার্থীরা হলেন— সভাপতি পদে এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, সম্পাদক পদে মো. রুহুল কুদ্দুস (কাজল), দুই সহ-সভাপতি পদে মো. হুমায়ুন কবির মঞ্জু ও সরকার তাহমিনা বেগম সন্ধ্যা, কোষাধ্যক্ষ পদে মো. রেজাউল করিম, দুটি সহ-সম্পাদক পদে মাহফুজুর রহমান মিলন ও মো. আব্দুল করিম। সাতটি সদস্য পদে ফাতিমা আক্তার, সৈয়দ ফজলে এলাহি অভি, মো. শফিকুল ইসলাম শফিক, মো. রাসেল আহমেদ, মো. আশিকুজ্জামান নজরুল, মহিউদ্দিন হানিফ ও মো. ইব্রাহিম খলিল।

এই দুই প্যানেলের বাইরে সভাপতি পদে ইউনুছ আলী আকন্দ এবং সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান নির্বাচন করছেন।

এছাড়া সম্পাদক পদে সাদা ও নীল প্যানেলের বাইরে অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি ও ফরহাদ উদ্দিন আহমেদ ভূইয়া প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। কোষাধ্যক্ষ পদে অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করছেন।

//এস//

rr
rr

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *